এক বর্ষীয়ান বাঙালির সিডনি জয়যাত্রা
আমাদের শিকড় বাংলাদেশে। কিন্তু প্রবাসে বাংলাদেশের ডানা মেলে উড়ে চলা এখন সবার নজরে পড়ছে। বলা উচিত, বেশ কিছু বছর থেকে এই অগ্রযাত্রা আর বিস্তার দেখছে সিডনি। রাজনীতি এবং ধর্মান্ধতা ছাড়া আর কিছুই আমাদের বিভক্ত করতে পারে না। মাঝেমধ্যে এমন সব অনুষ্ঠান বা আয়োজনে যাই, অন্তরের শক্তি দেখে বিস্মিত হই। এ যেন এক প্রাণের স্পন্দন। এ যেন বহু দূরে বাংলা-বাঙালির শিকড়ের সঙ্গে বর্তমানের মেলবন্ধন।
আজ আমি যে মানুষটির কথা লিখছি তিনি সিডনি এসেছিলেন প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে। আমি যখন কলেজের সীমানা পেরিয়ে উচ্চতর পাঠের চেষ্টা চালাচ্ছিলাম, তিনি তখন প্রশান্ত পাড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন। ভাবতেই আমি রোমাঞ্চিত হই। আজকাল যেমন বিদেশে যাওয়া ছেলের হাতের মোয়ার মতো, আকছার মানুষজন দেশের বাইরে চলে যায়, তখন তেমনটি ছিল না। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের নামও জানত না বহু দেশ। বহু জাতির কাছে আমরা ছিলাম এলিয়েন বা আগন্তুক। আমার এক গায়ক বন্ধু থাকেন সিডনিতে। বাংলাদেশে ব্যান্ড গানের শুরুর সময়টায় তাঁর গান ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল। সুদর্শন মামুন আমাকে একবার বলেছিলেন বাঙালিবিহীন তখনকার অজি জগতের সঙ্গে বসবাস তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। শহর থেকে অনেক দূরে তখনকার অস্ট্রেলিয়ায় সাদা মানুষদের সঙ্গে থাকাটা নানা কারণে ছিল কঠিন। সেই চাপ—বাংলা বলতে না পারার কষ্ট আর মনোবেদনায় মানুষের কত রকমের পরিবর্তন ঘটতে পারে। যেমন তাঁর মাথার কেশ উধাও হয়ে যাওয়া!
- ট্যাগ:
- মতামত
- বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ