ভার্চুয়াল বইমেলার অভিজ্ঞতা নিতে বাধা কী?

বিডি নিউজ ২৪ মারুফ রায়হান প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৪

আশাবাদী হতে সমস্যা নেই, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। যেহেতু জাতীয় নির্বাচনের তারিখের সঙ্গে বইমেলার উদ্বোধনকে সম্পর্কযুক্ত করে ফেলা হয়েছে, তাই যথাসময়ে, ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার আয়োজন অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেই মনে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বইমেলাপ্রেমী এবং মেলার সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত ও উপকারপ্রত্যাশীদের প্রয়োজনে এই ভিন্নতর প্রস্তাবনা। এ লেখা অরণ্যে রোদনতুল্য হলে হোক, সময়ের দাবিপূরণের প্রত্যাশা ও আন্তরিক সদিচ্ছা থেকে এটি উপস্থাপন করছি।


মনে রাখছি, একুশ সালে একুশের বইমেলা ভার্চুয়াল হওয়ার একটা সম্ভাবনার কথা জানা গিয়েছিল। সে সময়ে ঘোর করোনাকাল। প্রকাশকদের আপত্তির মুখে অবশ্য সেটি হয়নি, মাঠেই আয়োজিত হয়েছিল মেলা। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ঘোষিত সময়ে নির্বাচন হলে এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে হতে রোজা চলে আসবে। ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা আয়োজনের পক্ষে জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলে লাভ না হওয়ার সম্ভাবনাকে তাই সরিয়ে দেয়া যাচ্ছে না। ভার্চুয়াল বইমেলা হলে তবু কিছু একটা প্রাপ্তি ঘটবে। সব পক্ষ আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করলে মেলা দারুণ সফল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সেক্ষেত্রে দেশে প্রথমবারের মতো হবে ডিজিটাল বইমেলা। বিষয়টি মন্দ নয়।


বাংলা একাডেমির ব্যবস্থাপনাতেই এই ভার্চুয়াল বইমেলার প্রস্তাবনা দিচ্ছি, যেটি ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হবে অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে। অর্থাৎ ‘লাইভ মেলা’ শেষ হলেও যেহেতু এটি হবে ভার্চুয়াল মেলা, তাই এটি থেকে যাবে ওয়েবসাইটে। এই মেলার জন্যে প্রকাশকদের শতভাগ সহযোগিতার প্রয়োজন পড়বে। আর বলাই বাহুল্য বাংলা একাডেমিকে হতে হবে প্রফেশনাল, আন্তরিক এবং শতভাগ একনিষ্ঠ। এজন্যে সাময়িকভাবে দুয়েকজন বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কর্মী ছাড়া নতুন লোকবলের প্রয়োজন পড়বে না। বাংলা একাডেমির কর্মীদের দিয়েই কাজ সুসম্পন্ন হবে। সবকিছুর আগে ওয়েব ডেভেলপারকে পরিকল্পনাটি তুলে দিতে হবে এবং এরপরেই স্থাপন করতে হবে একটি ‘বাস্তব’ স্টুডিও। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে একুশের বইমেলার মূল আযোজনে যেসব ইভেন্ট থাকে, যেমনÑ মোড়ক উন্মোচন, একজন লেখকের সঙ্গে আলাপন সবই থাকবে এই ভার্চুয়াল বইমলোয়।


বইমেলার কেন্দ্রীয় ‘নায়ক’ হলো বই, আরো স্পষ্ট করে বললে নতুন বই। যেহেতু এটি ভার্চুয়াল বইমেলা, তাই মেলা পরিদর্শনকারী দর্শক অর্থাৎ পাঠকের দিকটি ভাবতে হবে সবার আগে। এই ভার্চুয়াল মেলা যেমন কম্পিউটার ইউজার-ফ্রেন্ডলি হবে, তেমনি মাল্টিমিডিয়ার পুরো সুবিধা তোলার দক্ষতা দেখাতে হবে। আমি মনে করি শত শত প্রকাশক নয়, সুপরিচিত ও নিয়মিত বই প্রকাশে সক্রিয় ৫০টি প্রকাশনা সংস্থার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলেই প্রস্তাবিত পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন সাপেক্ষে মেলাটি সার্থক হয়ে উঠেবে। মেলা উপলক্ষে কমপক্ষে ১০টি নতুন বই প্রকাশ করার সক্ষমতা (সদিচ্ছা ও নিশ্চয়তা) না পাওয়া গেলে এই ভার্চুয়াল মেলায় ওই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্থান হবে না। আসা যাক মূল আয়োজনে।


উদ্যানের মেলায় যেমন প্রকাশনা সংস্থাগুলোর স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকে, এই ভার্চুয়াল মেলাতেও অনেকটা সেরকমই স্বাতন্ত্র্যখচিত পৃথক স্টল থাকবে। কিরকম? ধরা যাক ইউপিএল, কথাপ্রকাশ ও প্রথমাÑ এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের ভার্চুয়াল স্টল থাকবে তাদের লোগো-পূর্বেকার স্টলসজ্জার আঙ্গিকে। সেখানে ক্লিক করলে পাঠক আলাদা আলাদা পরিসরে দেখতে পাবেন ১, ২ ৩ ফেব্রুয়ারিতে স্টলটি কী নতুন বই নিয়ে এলো। পাশাপাশি আসন্ন নতুন বইয়ের ছবি ও তথ্য থাকবে, থাকবে গত বছর প্রকাশিত ক্যাটালগের পিডিএফ। গুরুত্বপূর্ণ নতুন বই নিয়ে দু-তিন মিনিটের রিভিউয়ের ভিডিও দেয়া হবে। একাডেমির রিভিউয়ার টিমের সদস্যরাই একাজ করবেন। প্রকাশকের কোনো বার্তা থাকলে তারও ভিডিও আপলোড করা হবে। এটির জন্য একাডেমি কর্মীদের বাংলা বাজারে ছুটতে হবে না। প্রকাশকই মোবাইলে তাঁর বক্তব্য ধারণ করে একাডেমির বিশেষ ঠিকানায় মেইল করবেন। একাডেমির ভিডিও এডিটরের কাজ হবে সেটি এডিট করে প্রয়োজনীয় টেলপ ও সাউন্ড যোগ করে আপলোডের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুত করা। পাঠক তাহলে কী পেলেন? তার পরিচিত বা প্রিয় প্রকাশনা সংস্থার সদ্য প্রকাশিত বইয়ের তথ্যসম্বলিত পরিচিতি (কিছু বই সম্পর্কে ভিডিও আলোকপাত), বইয়ের ভেতরের পাতার ছবি ইত্যাদি। নতুন বইয়ের ক্রেতাদের জন্যে এটুকুই যথেষ্ট। প্রশ্ন হচ্ছে, পাঠক তার পছন্দের বই কিভাবে কিনবেন। হ্যাঁ, তিনি অর্ডার প্লেস করতে পারবেন একাডেমির ভার্চুয়াল বইমেলাতেই। সেই অপশন রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা সংস্থা সরাসরি কিংবা অনলাইন বই বিপণন কোম্পানির মাধ্যমে ক্রেতার কাছে বই পাঠিয়ে দেবেন।


বহির্বিশ্বে ভার্চুয়াল বইমেলার যে উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে, তাতে দেখা যায় এমন মেলায় লেখক-পাঠক চ্যাট সেশন, লাইভ ওয়েবিনার, প্যানেল আলোচনা এবং নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনÑ সবই দৃশ্যমান। তবে এজন্যে অত্যাবশ্যক হলো একটি শক্তিশালী ডেডিকেটেড ওয়েবসাইট বা প্ল্যাটফর্ম। ব্যবহারকারীরা (মানে মেলার দর্শক) যেকোনো ডিভাইস থেকে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে এতে প্রবেশ করতে পারবেন। ফলে ভৌগোলিক অবস্থান আর কোনো বাধাই হয়ে দাঁড়াবে না, থাকবে না সময়ের কড়াকড়ি সীমাবদ্ধতা। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষ, যখন খুশি মেলায় আসবেন এবং যতোক্ষণ খুশি সংযুক্ত থাকবেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও