জটিলতা কি দূর হলো?
বাতাসের মধ্যে থেকে যেমন বাতাসকে অস্বীকার করা যায় না, তেমনি সমাজে থেকে রাজনীতিকে উপেক্ষা করা যায় না। রাজনীতি যেহেতু সমাজের পরিচালক শক্তি, তাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সবাই রাজনীতির দ্বারা প্রভাবিত। অনেকেই বলেন, আমরা রাজনীতি বুঝি না, রাজনীতি করি না কিন্তু তারাই প্রত্যাশা করেন দেশে শান্তি ও স্বস্তি থাকুক এবং মানুষের জীবনে নিশ্চয়তা আসুক। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি তো উত্তেজনা আর অনিশ্চয়তায় ভরা। ফলে চাইলেও এখান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপায় নেই। আর না চাইলেও, এখান থেকে মুক্তি নেই। রাজনীতির প্রভাব পড়বেই অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও মানুষের জীবনধারার মধ্যে। গণঅভ্যুত্থান ছিল রাজনৈতিক উত্তেজনার উচ্চতম রূপ। মানুষের আকাক্সক্ষা আর অপমান মিলে সেখানে এমন এক রসায়ন তৈরি হয়, তা যেন ভয় ভুলিয়ে দেয়।
যে জীবন এত প্রিয়, সেই জীবনের ঝুঁকি নিতেও তখন দ্বিধা করে না মানুষ। সমস্ত দাবি কেন্দ্রীভূত হয়ে একটি লক্ষ্যে পরিণত হয়। তা হলো সরকারের উচ্ছেদ। গণঅভ্যুত্থানে মানুষ যেমন উচ্ছেদ করেছে সরকারকে। কিন্তু তারপরই শুরু হলো পরবর্তী সরকার গঠনের প্রশ্ন এবং পথ অন্বেষণ। গণমানুষের এত প্রত্যাশা পূরণ হবে কীভাবে? পুরনো দুঃশাসনের অবসান করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে কীভাবে? দল অনেক, পথ অনেক তাই বিতর্ক যেন শেষ হতে চায় না। এর সঙ্গে সরকারের নানা কথা ও কর্মকাণ্ডে তৈরি হয়েছে সংশয় নির্বাচন কি হবে? নির্বাচন না হলে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করবে কার কাছে এবং কোন পদ্ধতিতে? সনদ ছাড়া নির্বাচন নয়, গণভোট ছাড়া নির্বাচন নয় এই বিতর্ক ছাপিয়ে গেল সবকিছুকে। আলোচনা থেকে হারিয়ে গেল জুলাইয়ের আকাক্সক্ষা আর তা বাস্তবায়নের কথা।
- ট্যাগ:
- মতামত
- গণঅভ্যুত্থান