নারীকেন্দ্রিক সিনেমা বাড়ছে, কী বলছেন বাঁধন, মেহজাবীন
নারীকেন্দ্রিক সিনেমার বাজার নেই, নারীকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানালে সাধারণ দর্শক দেখতে চান না—কেবল বাংলাদেশ নয়, পুরো উপমহাদেশের সব সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে কান পাতলেই এমন কথা শোনা যায়। এরপরও গত এক বছরে মুক্তি পাওয়া উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে অর্ধেকের বেশি সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন নারী! এসব সিনেমায় কখনো উঠে এসেছে নারীদের উদ্যাপনের গল্প, কখনো নারীর লড়াই, কখনোবা নারী নির্মাতা নিজেই বলেছেন নারীর গল্প।
বাস্তবঘেঁষা গল্প, নির্মাণে মুনশিয়ানা
২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পায় ‘প্রিয় মালতী’। শঙ্খ দাশগুপ্তের সিনেমাটি দেখে মনে হবে এ যেন সিনেমা নয়, বাস্তবের নিখুঁত রূপান্তর। কেবল গল্প নয়, অভিনয়, কারিগরি দিক, সিনেমাটোগ্রাফি আর নির্মাণ মিলিয়ে সিনেমা হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ কাজ প্রিয় মালতী। এ সিনেমাই নয়, গত এক বছরে মুক্তি পাওয়া নারীকেন্দ্রিক সব সিনেমাতেই কমবেশি এই চিত্র পাওয়া গেছে। অতি মেলোড্রামা, দুঃখ-কষ্ট আর হাহাকার থেকে নারীকেন্দ্রিক সিনেমাকে ‘মুক্তি’ দিয়েছেন নির্মাতারা।
কেন নারীকেন্দ্রিক সিনেমা
প্রশ্ন শুনেই কিছুটা প্রতিবাদ করে উঠলেন আলোচিত দুই সিনেমার (‘প্রিয় মালতী’ ও ‘সাবা’) প্রধান চরিত্রের অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। বললেন, ‘নারীকেন্দ্রিক সিনেমা’ তকমা থেকে মুক্ত হওয়া দরকার সবার আগে। এই তকমা মানেই একটা সিনেমাকে আলাদা করে ফেলা। এতে দর্শকদের মধ্যেও বিভেদ সৃষ্টি হয়, সিনেমা দেখার প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হয়।
তৈরি হচ্ছে ইতিবাচক সংস্কৃতি
এক বছরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীকেন্দ্রিক সিনেমা যেমন মুক্তি পেয়েছে, তেমনই দেখা গেছে এসব সিনেমার নির্মাতা, অভিনয়শিল্পীদের একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে। ‘সাবা’ সিনেমার ভূয়সী প্রশংসা করলেন ‘এশা’ অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। এ ছাড়া তাঁর ভালো লেগেছে ‘প্রিয় মালতী’ ও ‘বাড়ির নাম শাহানা’। মেহজাবীনের ভালো লেগেছে ‘জয়া আর শারমীন’ ও ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’।
দর্শকখরা, তবু প্রত্যাশা
ঈদ মানেই যেন হলভর্তি দর্শক, আর অন্য সময় গড়ের মাঠ। একটা দীর্ঘ সময় দেশে ভালো মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ না হওয়ার কারণে হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দর্শক। তবে এ ধারা ভাঙতে চাইছেন নির্মাতারা। বাঁধন মনে করেন, এ ধারা ভাঙতে প্রযোজকদের এগিয়ে আসতে হবে। নারী প্রযোজকদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। নারী নির্মাতাদের চোখে নারীর গল্প, নারীর চোখে পুরুষের গল্পও দেখতে চান। ‘সিনেমাই হতে পারে সমাজের বৈষম্য দূর করার একটা উল্লেখযোগ্য মাধ্যম,’ বলেন তিনি।