পুব আকাশে তখনো ঠিকমতো আলো ফোটেনি। আশ্বিনের হালকা কুয়াশার চাদরে মোড়া প্রিয় নগরবাড়ি। গ্রামজুড়েই শীতল একটা আবেশ। দেবী দুর্গার আগমনী বার্তায় উৎসবমুখর চারপাশ। মায়ের হাতে বোনা নকশিকাঁথা গায়ে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছি। সেই মুহূর্তে শিওরের জানালায় টোকা! এক, দুই, তিন! কবাট খুলতেই ওপাশে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণ—আমার বন্ধু। মুখে অমলিন হাসি আর হাতে ফুল তোলার সাজি। বলে, চল যাই।
আগের দিন পঞ্চমীর রাতে কুটিকাকার মণ্ডপে মা দুর্গার চোখ আঁকা হয়েছে। অপূর্ব সেই ঘটনার সাক্ষী হতে গভীর রাত পর্যন্ত সবাই মন্দিরে ছিলাম। বিনয় পাল যখন রং-তুলির আঁচড়ে মায়ের চক্ষুদান করেন, তখন উলু আর শঙ্খধ্বনিতে চারপাশে তৈরি হয় মোহনীয় এক পরিবেশ। মনে হয়, এই মা যেন আমাদের খুব কাছের, খুব আপন।
কথিত আছে ষষ্ঠী থেকে দশমী—এই পাঁচ দিনের জন্য কৈলাস থেকে মর্ত্যে বাবার বাড়ি আসেন উমা তথা মা দুর্গা। সঙ্গে আসেন গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী আর কার্তিক।
কাল দেবীর বোধন হয়েছে। আজ মহাষষ্ঠী। মায়ের পূজা শুরু। আর পূজার অবিচ্ছেদ্য উপাদান হচ্ছে ফুল। আমাকে আর কৃষ্ণকে পূজার ফুল তোলার দায়িত্ব দিয়েছেন কুটিকাকা। তাই সাতসকালেই এত তাড়া। ঝটপট তৈরি হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসি।