চেতনায় চুরি-জোচ্চুরি লুট-হরিলুট
এককে লুট, যৌথতে হরিলুট। চুরি-জোচ্চুরিও তাই। চিন্তা-চেতনা, মন-মগজে চুরি-চামারি, লুট হরিলুটের বিভিন্ন ঘটনা সামনে আসছে। গায়ে চিমটি কেটে ভাবতে হচ্ছে, এটাই আমরা? এই আমাদের বাংলাদেশ? মূলত হরি বা ঈশ্বরের উদ্দেশে নিবেদিত অর্ঘ্য বা প্রসাদ ভক্তদের দিকে ছুড়ে দেওয়া ‘হরির লুট’ নামে প্রচলিত ছিল। ‘লুস’ শব্দের অর্থ যে ‘ভোজন’, তা অনেকের অজানা। হরির লুস বা ভোজন অসংখ্য লোক হুড়োহুড়ি করে লুটিয়ে নেয়। এখানে কোনো শৃঙ্খলা নেই। লুটের মতো যার শক্তি বা লোকবল, সে ভাগে বেশি পায়।
হরির এ বাতাসা থেকে নিরীহরা বাদ যায়। অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। তাই সাধারণ মানুষের কাছে লুস কথাটি হয়ে যায় লুট। মানে হরির লুস হয়ে যায় হরির লুট, হরিলুট। বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান মতে, সংস্কৃত হরি ও বাংলা লুট শব্দের সমন্বয়ে গঠিত হরিলুট অর্থ (বিশেষ্যে) হরি সংকীর্তনের পর ভক্তদের মধ্যে হরির নামে বাতাসা প্রভৃতি ছড়িয়ে দেওয়ার সংস্কার। অভিধানে যাই থাক, এর বাস্তব মানে হচ্ছে জোর যার মুল্লুক তার, সরকারকা মাল, দরিয়ামে ঢাল। পটপরিবর্তনের পর নানা নামে, ছুঁতা, বাহানায় বাংলাদেশে হরিলুটের বাতাসার এক একটি খবর আসছে আমাদের সামনে। কখনো কখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। কেবল চেতনা বাস্তবায়নের নামেই ৩ বছরে ২শ কোটি টাকা ব্যয়ের তথ্য শোনা মাত্রই বিশ্বাস হয়? মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নানা প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে লুট-হরিলুট আরব্য রজনীর, আলী বাবা চল্লিশ চোরের কাহিনিকেও হার মানায়।