নেপালে মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টার আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী খড়্গপ্রসাদ (কেপি) শর্মা অলি ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে নানা মহলে নানারকম বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে এই আন্দোলনের ধারা ও প্রকৃতি নিয়ে। অনেকেই ২০২২ সালে শ্রীলংকায় এবং ২০২৪ সালে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে নেপাল সরকার উৎখাত আন্দোলনের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন। এ ব্যাপারে ভারত সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। শুরু থেকেই তারা এ আন্দোলনের পেছনে বৃহৎ শক্তির ইন্ধন আছে বলে প্রচার শুরু করেছে।
বাংলাদেশের ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’কে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ছিল তা স্বীকার না করে, এর পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধন ছিল বলে সে দেশের গণমাধ্যমগুলো যেমন জোর প্রচার চালিয়েছে; ঠিক তেমনই নেপালি জনগণের আন্দোলনের পেছনে মার্কিন যোগসূত্র খুঁজে বেড়াচ্ছে। তারা বলছে, ‘ওলি চীনপন্থি, সুতরাং এ আন্দোলনে চীনের সম্পৃক্ততা থাকার সম্ভাবনা নেই। চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। অতএব এই টানাপোড়েনের জের টেনে যুক্তরাষ্ট্রকেই এ আন্দোলনের ইন্ধনদাতা হিসাবে ভারত দাঁড় করার চেষ্টা করছে। অথচ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন অন্য কথা। অলি ভারতের কাছে বরাবরই চীনপন্থি হিসাবে বিবেচিত। শুধু তাই নয়, বিগত কয়েকটি মেয়াদে নেপালের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বিভিন্ন ইস্যুতে নেপাল-ভারত সম্পর্কের যে ঘাটতি ছিল এবং নেপালের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষার্থে ভারতবিরোধী মনোভাবের জন্য অলিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে ভারতও যে থাকতে পারে তা আড়াল করতেই ভারত আগেভাগে এ ধরনের বয়ান নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সম্প্রতি অলির লেখা একটি চিঠি তারই ইঙ্গিত দেয়।