ইন্দোনেশিয়া আজ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃত। প্রায় ২৮ কোটি মানুষের এই বহুজাতিক ও বহু সাংস্কৃতিক দেশটি দীর্ঘ সামরিক শাসন, কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি ও দুর্নীতির গভীর সংকট অতিক্রম করে গণতান্ত্রিক ধারায় প্রবেশ করেছে। কিন্তু সেই অর্জিত গণতন্ত্র আবারও অস্থিতিশীলতার ছায়ায় ঢেকে যাচ্ছে। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ১১ মাসের মাথায় প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোকে ঘিরে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তা শুধু তাঁর নেতৃত্ব নয়, গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দুই সপ্তাহব্যাপী দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভ প্রমাণ করছে, জনগণের অসন্তোষ ক্ষণস্থায়ী নয়; বরং এটি দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সাংবিধানিক সংকটের ফল।
এ প্রেক্ষাপটে ইন্দোনেশিয়ার গণতন্ত্র এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে—একদিকে কর্তৃত্ববাদী কৌশল অবলম্বন করে সাময়িক স্থিতিশীলতার প্রলোভন, অন্যদিকে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেখানে ইন্দোনেশিয়াকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রধান শক্তি হিসেবে দেখা হয়, সেখানে প্রাবোওর প্রতিটি সিদ্ধান্ত শুধু দেশীয় রাজনীতিই নয়, আঞ্চলিক কূটনীতি ও বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলবে। এ প্রবন্ধে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের পটভূমি, সংকট সমাধানে করণীয়, দুর্নীতিবিরোধী সংগ্রাম এবং প্রেসিডেন্ট প্রাবোওর সামনে থাকা দুটি সম্ভাব্য পথ বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে।