জননিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে ভাবুন

জাগো নিউজ ২৪ মোস্তফা হোসেইন প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:১৯

শৈশবে আমরা মজার একটা খেলা খেলতাম। কেউ কেউ এই খেলাকে চোর পলান্তি নামে ডাকতো। ৮-১০জন শিশু বৃত্তাকারে দুই তিন ফুট দূর দূর দাঁড়াতো। একজন থাকতো বৃত্তের মধ্যবিন্দুতে। মাঝখানের খেলোয়াড়কে বৃত্ত ভেদ করে বেরিয়ে যেতে হতো। মাঝখানের খেলোয়াড় যখন ফাঁক খোঁজার জন্য এদিক ওদিক তাকাতো তখন বৃত্তাকারে দাঁড়ানো খেলোয়াড়রা সমস্বরে চিৎকার করতো-কোন দুয়ার দিয়া যাবিরে বেতের বারি খাবি রে। কৌশলে মাঝের খেলোয়াড় বৃত্ত ভেদ করে বেরিয়ে যেতে পারলে বিজয়ী হতো। আর যদি ধরা পড়ে যেতো তাহলে হালকা উত্তম-মাধ্যম জুটতো কপালে। গ্রামীণ এই খেলার সাথে আজকের প্রজন্মের অনেকেরই পরিচয় থাকার কথা নয়। যারা জানেন তাদের মনে করিয়ে দেওয়া এবং যারা জানেন না তাদেরও খেলার সঙ্গে এই মুহূর্তের বাংলাদেশের পরিস্থিতি মিলিয়ে দেখার অনুরোধ করছি।


বৃদ্ধ বয়সে এসে সেই খেলাটার কথা খুব মনে আসছে। আর মনে হচ্ছে, সেই খেলোয়াড়রা এখন কেউ আর শিশু নেই। শক্তপোক্ত কিশোর তরুণ কিংবা আমার মতো বৃদ্ধ সবাই। উল্লিখিত চোরপলান্তি খেলার মাঝখানে থাকতো একজন খেলোয়াড়। এখনকার এই খেলায় মাঝখানে ১৮ কোটি মানুষের অন্তত সাড়ে ১৭ কোটি জন। তাদের চারদিকে ঘিরে আছে মব সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, ঘুসখোর, সুদখোরজাতীয় একেকটি উপদ্রব। সমস্বরে তারা আওয়াজ তুলছে-কোন দুয়ার দিয়া যাবি রে।


শৈশবের খেলায় চোর বেটাকে মেকি মারপিট করা হতো। পরাজিত খেলোয়াড় উহ্ আহ করতো খেলার ছলে। এখনকার খেলায় উহ্ আহ করার সুযোগও নেই। যদিও মুখে মুখে বাকস্বাধীনতার কথা বলা হয়। বৃত্তবন্দি মানুষের কথা বলার জন্য যে সাংবাদিকরা কথা বলতো তাদের জীবনই বিপন্ন এখন। তাদেরই প্রাণ হারাতে হয় অপঘাতে।


সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের লাশ ভেসেছিল মেঘনায়। এবার খুলনায় রূপসা নদীতে ভাসতে দেখা গেলো আরেক সাংবাদিক ওয়াহিদ-উজ-জামান বুলুর লাশ। এমন নৃশংস ঘটনাও তলে পড়ে যায় মৃত্যু শঙ্কার কারণে। অনিশ্চয়তা, অনিরাপত্তা দানা বেঁধে উঠেছে সারা বাংলায়। শিক্ষাঙ্গনে অস্ত্রের ঝনঝনানি, সন্ত্রাস, ছিনতাই শব্দগুলো এখন হারিয়ে যাচ্ছে মব আর হামলার কাছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেখানে নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, সেখানে তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আসে রাজনৈতিক নেতাদের ওপর সশস্ত্র আক্রমণের।


গণঅধিকার পরিষদের প্রধান ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে আইসিইউতে পাঠানো হয় পিটিয়ে, এই অভিযোগটা ইউনিফরমধারীদের বিরুদ্ধেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পাশের গ্রাম জোবরায় রীতিমতো যুদ্ধকাণ্ড দেখছে মানুষ। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা-পাল্টা হামলায় তটস্থ ক্যাম্পাস। চুয়েটের শিক্ষার্থীরা রাজপথে হুংকার ছেড়েছে কদিন আগেও। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাও উত্তপ্ত হয়ে আছে অসন্তোষে। এর আগে বুয়েটসহ সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথ কাঁপিয়ে ঢাকা শহর অচল করে দিয়ে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের কিছু দাবি আদায়ের লক্ষ্যে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স শিক্ষার্থীরাও পাল্টা শক্তি প্রদর্শন করেছে রাজধানীসহ নানা স্থানে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সামাজিক অস্থিরতা আত্মহত্যার মতো ঘটনা দেশকে নরকপুরীতে পরিণত করেছে। একাধিক আত্মহত্যার কারণ হিসেবে জানা গেছে ঋণের কিস্তি দিতে অপারগতা। কেউ কেউটা কারও নিকটজন আত্মহত্যা করলে হয়তো প্ররোরচনাকারীর তল্লাস হতো। ঋণগ্রস্ত গরিব মানুষ কিংবা সাংবাদিকের আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীর খোঁজ করবে কে?


সরকার ব্যস্ত সংস্কার নিয়ে, রাজনৈতিক দলগুলো ব্যস্ত নির্বাচন নিয়ে, জনগণের ঘাম ঝরছে দুর্মূল্যের বাজারে সংসারের ঘানি টানতে। মা-বাবাকে দোয়া ইউনূস পড়তে হয় প্রতিদিন সন্তানকে স্কুল-কলেজে পাঠিয়ে। আতঙ্কে কাটাতে হয়, তাদের সন্তান ফিরবে তো নিরাপদে? সুতরাং কে কোথায় কীভাবে মরল কার খবর কে রাখে?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও