
আইসিইউ নির্মাণে ‘ফাঁকি’, ৫৬৪ কোটি টাকার হিসাবে গরমিল
পাঁচ বছরে খরচ হয়েছে হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বাস্তবায়ন হয়নি। যন্ত্রপাতি অচল, নিয়োগ হয়নি জনবল, অনেক জেলায় আইসিইউ ইউনিট বন্ধ। ৫৬৪ কোটি টাকার অডিট আপত্তিরও মিলছে না জবাব।
জেলা পর্যায়ে আইসিইউ স্থাপন ও কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেওয়া ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন বিপর্যয়কর চিত্র উঠে এসেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ৫০টি জেলায় প্রতিটি ১০ শয্যার ৫০০ আইসিইউ স্থাপনের লক্ষ্য ছিল প্রকল্পের আওতায়। চালু হয়েছে মাত্র ১৩টি জেলায়। ১৬টি শিশু-আইসিইউ (পেডিয়াট্রিক) এবং ১৫টি মাতৃ-আইসিইউ (অবস্টেট্রিক)—কোনো কাজই শুরু হয়নি। ৫০টি জেলায় ২০ শয্যার এক হাজার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণের অগ্রগতি শূন্য। অথচ গত পাঁচ বছরে কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ৫৬৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার হিসাব দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। এমনকি ৭৬টি অডিট আপত্তিও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রকল্প অফিস মাত্র আটটি অডিট আপত্তির জবাব দিয়েছে, বাকিগুলোর কোনো খবর নেই।
প্রকল্পটি নিয়ে নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইএমইডি। মূলত যেসব বিভাগ ও জেলায় মেডিকেল কলেজ আছে সেসব জেলা বাদ দিয়ে বাকি ৫০টি জেলা হাসপাতাল নির্বাচন করা হয়।
যথাসময়ে আইসিইউ নির্মাণ না করা প্রসঙ্গে প্রকল্পের পরিচালক ড. সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংকের টাকা খরচের সময়সীমা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়। কিন্তু এর আগে পূর্ত কাজ হয়নি। যে কারণে যন্ত্রপাতি কেনা হয়নি। নির্মাণ দেরিতে হয়েছে।’
যেগুলো চালু হয়েছে সেগুলো বন্ধ কেন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পরে সংশ্লিষ্টদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তারা পরিচালনা করবে। যেসব কাজ বাকি আছে, সেগুলো স্বাস্থ্যের অপারেশন প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে করা হবে। সেই প্রকল্পের আওতায় বাকি সব আইসিইউ নির্মাণ করা হবে।’
৫৬৪ কোটি টাকার অডিট আপত্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এগুলো অডিট আপত্তি সঠিক না। অনেক ক্ষেত্রে অনেক ডুপ্লিকেট আছে।’