অভিবাসন ও বিনিয়োগে আশার আলো

ঢাকা পোষ্ট অধ্যাপক ড. সুজিত কুমার দত্ত প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫২

২০২৫ সালের অগাস্ট মাসের ১১ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রাষ্ট্রীয় সফরটি ছিল দুই দেশের সম্পর্কে একটি নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এটি ছিল ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ দ্বিপাক্ষিক রাষ্ট্রীয় সফর, যা গত বছর অক্টোবর মাসে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ঢাকা সফরের প্রত্যুত্তর।


এই সফর কেবল গতানুগতিক আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং তা ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় উন্নীত করার এক সুদৃঢ় পদক্ষেপ। এই সফরকালে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শ্রমবাজার, শিক্ষা, পর্যটন ও প্রতিরক্ষা খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোয় বিদ্যমান সম্পর্ক পর্যালোচনা ও শক্তিশালী করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের এই বৈঠক অভিবাসন, বিনিয়োগ এবং কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে।


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রবাসী শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য এবং মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরে তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের এই সফরে অভিবাসন সংক্রান্ত আলোচনা ছিল অত্যন্ত ফলপ্রসূ। ঐতিহাসিকভাবে, এই শ্রমবাজারের সাথে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ যেমন ভিসা জটিলতা, শ্রমিকদের শোষণ এবং কর্মপরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যা জড়িয়ে আছে।


তবে এই সফরে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকগুলো এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দাঁড় করানোর ইঙ্গিত দেয়। এই সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে শ্রমশক্তি ব্যবস্থাপনার একটি স্বচ্ছ ও নিরাপদ প্রক্রিয়া তৈরি হতে পারে। এর ফলে শ্রমিকদের বৈধ উপায়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করার সুযোগ বাড়বে, পাশাপাশি তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।


মালয়েশিয়া তার অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণের জন্য দক্ষ ও আধা-দক্ষ জনশক্তি পেতে পারে, অন্যদিকে বাংলাদেশ পেতে পারে বৈধ চ্যানেলে প্রেরিত রেমিট্যান্স। এটি কেবল একটি অর্থনৈতিক চুক্তি নয় বরং অভিবাসী শ্রমিকদের মর্যাদা ও জীবনমান উন্নত করার একটি প্রতিশ্রুতি। দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশই লাভবান হবে এবং এই প্রক্রিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি খাতের জন্য একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।


এই সফরের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্বাক্ষরিত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। মালয়েশিয়ার সঙ্গে মোট পাঁচটি সমঝোতা স্মারক এবং তিনটি ‘নোট অব এক্সচেঞ্জ’ সই করেছে বাংলাদেশ। এই চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা সহায়তা, জ্বালানি, কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য।


প্রতিরক্ষা সহায়তা: এই সমঝোতা সামরিক ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াবে। প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি বিনিময় এবং সামরিক সরঞ্জামের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহায়তা দুই দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরও মজবুত করবে। এটি কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয় বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।


জ্বালানি: জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে সহায়ক হতে পারে। মালয়েশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি এবং এই খাতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।


কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা: এই চুক্তিটি ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের মধ্যে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ বিনিময়ের সুযোগ বাড়বে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মালয়েশিয়া এখন থেকে আরও আকর্ষণীয় শিক্ষা গন্তব্য হতে পারে। পাশাপাশি, কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা আরও বাড়বে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও