
জুলাই তুমি স্বাধীন সকাল তুমিই বাংলাদেশ
আজ রক্তে ভেজা বিপ্লবের দিন। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। জাতির মৃত্যুঞ্জয়ী সন্তানদের স্যালুট জানানোর দিন। সেই ৫ আগস্ট আজ। জনরোষ থেকে বাঁচতে ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা যেদিন দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে যে গণ-অভ্যুত্থানের কথা মানুষ কোনোদিন ভুলবে না। কারও ভাষায় চব্বিশের বর্ষা বিপ্লব। যে বিপ্লবের আইকন হিসাবে দুহাত প্রসারিত করা হুডখোলা বুকে বিপ্লবী আবু সাঈদের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। যে মহান শহীদি মৃত্যুর দিন নতুন এক ইতিহাসের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সে মৃত্যু বেঁচে থাকবে চিরকাল। দেশের জন্য জীবনদানের সেই গৌরবময় জীবনের মৃত্যু হবে না কোনোদিন।
স্বৈরশাসকদের রুখে দিতে বিপ্লবীদের মরণজয়ী মৃত্যু আমাদের জাগাবে বারবার। শত হতাশার ঘুম থেকে ফের জাগাবে মুগ্ধের সেই ভুবনজয়ী চির অমলিন হাসি। আমাদের রক্তে বারবার কাঁপন ধরাবে স্কুলপড়ুয়া আনাসের যুদ্ধে যাওয়ার সেই চিঠি। মাকে চিঠি লিখে যে আনাস আর ঘরে ফেরেনি। নাম লিখিয়েছে শহীদি কাফেলায়। শত্রুর তপ্ত বুলেটে সিক্ত আর গরম রক্তের গন্ধে সয়লাব অহংকারের ছত্রিশে জুলাই। আবার ঝলসে ওঠার প্রত্যয়দীপ্ত শপথে প্রস্তুত আমাদের তারুণ্য। এতসব গৌরবমাখা সেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হলো আজ।
গত বছরের এই দিনে রক্তস্নাত জুলাই বিপ্লব বিজয়ীর বেশে ধরা দেয় কোটি কোটি জনতার মুষ্টিবদ্ধ হাতে, উদ্বেল-উচ্ছ্বাসে। এর মধ্যে পার হলো একটি বছর। আশা-নিরাশার শত স্বপ্নভঙ্গের ৩৬৫ দিন। এই গণ-অভ্যুত্থান ঘিরে জাতির সামনে এখন অনেক প্রশ্ন। কী চেয়েছিলাম আমরা, আর কী পেলাম। একজন মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ তার জীবন। আর সেই জীবন তারা বীরের বেশে দেশের মানুষের জন্য অকাতরে বিলিয়ে গেছেন। এক দুজন নন, প্রায় দেড় হাজার বিপ্লবী রক্তাক্ষরে লিখে গেছেন তাদের নাম। আহত হয়েছেন হাজার হাজার জুলাই যোদ্ধা। যাদের অনেকে চিরদিনের জন্য অন্ধ ও পঙ্গুত্ববরণ করেছেন হাসিমুখে।
এখন তাই সবার সামনে একটি প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সেটি হলো-জুলাই যোদ্ধারা যে ফ্যাসিবাদ থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন, সেই ঘেরাটোপ থেকে আমরা আদৌ কি মুক্ত হতে পেরেছি? ভবিষ্যতে কি সেই মুক্তির সোপান তৈরি হচ্ছে? না সেই পুরোনো বন্দোবস্তের পথেই হাঁটছে প্রিয় বাংলাদেশ।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস