
জুলাই অভ্যুত্থান: এক বছরে কতটা বদলাল দেশ?
গত বছরের ৩ অগাস্ট, সে দিন নতুন এক বাংলাদেশ এবং রাজনীতিতে নতুন ‘বন্দোবস্ত’ প্রতিষ্ঠার আশা জাগানিয়া এক দফার আন্দোলেনের ঘোষণা এসেছিল; তার দুদিনের মাথায় পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের।
সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ইতিহাস বদলে দেওয়া ৩৬ দিনের ওই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন করছে বাংলাদেশ।
এই এক বছরে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ছিল বিচার, সংস্কার আর নির্বাচন। নজিরবিহীন সেই অভ্যুত্থান এক বছরে দেশকে কতটা বদলাতে পেরেছে, সেই প্রশ্নও জনপরিসরে রয়েছে।
অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা যে ‘দায় ও দরদের’ রাজনীতির কথা বলেছিলেন, সেটাই বা এগোলো কত দূর? বছর ঘুরে সে দিকটাতে নজর দিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকার যে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সাড়ে পাঁচ মাসের আলোচনার পর তার ফলাফল কী হতে যাচ্ছে, সেই প্রশ্ন থাকছে।
জুলাই অভ্যুত্থানের দমন-পীড়নের বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি কত দূর?
বেকার তরুণের মধ্যে যে স্বপ্ন ও আশা জেগেছিল তাতে রাষ্ট্র কী করতে পারল? ব্যবসা-বাণিজ্যেই বা কী পরিবর্তন এল?
অন্তর্বর্তী সরকার অনেক পরিবর্তনের আভাস দিলেও বাস্তবে রাজনীতি, অর্থনীতি কিংবা কূটনৈতিক কর্মকৌশলে মৌলিক কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি—বিশ্লেষকদের এমনটাই মত।
আন্দোলনের গর্ভে জন্ম নেওয়া ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি কি রাজনৈতিক খেলায় খেই হারিয়ে ফেলেছে?
আন্দোলনের ঝাণ্ডা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, নতুন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ কেউ চাঁদাবাজির অভিযোগের বাইরে থাকতে পারছে না।
অভ্যুত্থানের এক বছর পরের পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন বলছেন, “খুব যে বড় কোনো পরিবর্তন আমরা পেয়েছি, তা বলব না।”
তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পার্থক্যের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “একটাই পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু এটা একটা বিশাল পরিবর্তন। আমরা এখন কথা বলতে পারি, ‘ভয়হীনভাবে’ মতামত প্রকাশ করতে পারি—এটাই আমার মনে হয় সবচেয়ে বড় অর্জন। এটা এক বিশাল পার্থক্য।”
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস