
মস্তিষ্ক নীরবে ধ্বংস হচ্ছে যে আট অভ্যাসে
প্রতিদিন এমন কিছু অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া হয়, যা নীরবে মস্তিষ্কের ক্ষতি করে যাচ্ছে।
একসঙ্গে একাধিক কাজ করার চেষ্টা
অনেকেই মনে করেন, একসঙ্গে অনেক কাজ করলে সময় বাঁচে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউরোসাইকোলজিস্ট ডা. সানাম হাফিজ বলেন, “মাল্টিটাস্কিং’ করলে মস্তিষ্ক আরও বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে।”
তিনি পরামর্শ দেন, “২৫ মিনিট একটানা একটি কাজে মনোযোগ দিন, তারপর পাঁচ মিনিট বিরতি নিন। এটি মস্তিষ্ককে স্বাভাবিক ছন্দে কাজ করতে সাহায্য করে।”
ঘুম বিসর্জন দেওয়া
প্রতিদিন সাত ঘণ্টার কম ঘুম মস্তিষ্কের জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ক্লিনিক্যাল নিউরোসাইকোলজিস্ট ডা. সারা বুলার্ড বলেন, “ঘুমের সময় মস্তিষ্ক বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করে, স্মৃতিকে সংরক্ষণ করে এবং স্নায়ুর পুনরুদ্ধার করে।”
নিয়মিত নাস্তা বাদ দেওয়া
রাতে দীর্ঘক্ষণ না খাওয়ার পর সকালে নাশতা না করাটা মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর।
ডা. হাফিজ বলেন, “নাশতা না করলে মনোযোগ কমে, রাগ বাড়ে, উদ্যম কমে যায়।”
তার মতে, “প্রোটিন ও আঁশসমৃদ্ধ হালকা কিছু খাওয়া উচিত। যেমন- ডিম ও সবজি, অথবা স্মুদি। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির থাকে এবং মনোযোগ বাড়ে।”
ঘুমানোর আগে স্ক্রলিং
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে বা স্ক্রিনে চোখ রাখলে ঘুমের গুণমান নষ্ট হয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. জেমি ম্যানিসকালকো বলেন, “এই স্ক্রলিং কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে তোলে এবং মেলাটোনিন উৎপাদন কমিয়ে দেয়, ফলে ঘুমে সমস্যা হয়।”
অতিরিক্ত কাজের তালিকা তৈরি
দিনের শুরুতে বিশাল কাজের তালিকা বানানো মস্তিষ্ককে বিপাকে ফেলে।
ড. ম্যানিসকালকো বলেন, “কার্যক্ষম স্মৃতি একসঙ্গে তিন থেকে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ধারণ করতে পারে। তার বেশি হলে মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।”
এই বিভ্রান্তি মনোযোগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে।
সামাজিক যোগাযোগ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া
বন্ধু, পরিবার বা সহকর্মীদের সঙ্গে সময় না কাটালে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
বিশেষ করে যারা একাকী থাকেন বা অবসর জীবনে আছেন, তাদের জন্য সামাজিক মেলামেশা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখার অন্যতম উপায়।
এলডিএল কোলেস্টেরল উপেক্ষা করা
অনেকেই কোলেস্টেরলকে হার্টের সমস্যার সঙ্গে যুক্ত করেন। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি মাত্রার এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল মস্তিষ্কের রক্তনালিতে ক্ষতি করে এবং মস্তিষ্কের আয়তন কমিয়ে দেয়।