
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি এবং কিছু প্রশ্ন
বিশ শতকের মার্কিন নারী লেখক এম কে রলিংসের ‘এ মাদার ইন ম্যানভিল’ গল্প দিয়েই শুরু করা যাক। এখানে জেরি নামের ১২ বছরের এক শিশু লেখকের জ্বালানি কাঠ জোগাড় করার দায়িত্ব নেয়। বয়স কম হওয়ায় লেখকের অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জেরি কাজটি করতে চায়। উপায়হীন হয়ে কাঠ চেরাইয়ের জন্য লেখক তাকে একটি কুঠার দেন।
একদিন কাঠ চেরাই করতে গিয়ে কুঠারটি ভেঙে গেলে জেরি নিজেই কুঠার ভাঙার দায় নেয়, যদিও লেখক ভালো করেই জানতেন জেরির এতে কোনো দোষ ছিল না। আমাদের দেশে না আছে সেই রকম ঘটনা, না আছে জেরির মতো সেই সততা, মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতা। এ দেশে যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখন আত্মপক্ষ সমর্থন বা নিজের সাফাই গাওয়া নিয়ে আমরা ব্যস্ত।
সাহিত্য ছেড়ে বাস্তবের কয়েকটি উদাহরণ টানা যাক। চলতি বছরের মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণকালে ভুলক্রমে বোমা ড্রপ হওয়ায় কিছু লোক আহত এবং অনেক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনী প্রধান সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দেন। আমাদের দেশে ওসব তো ভাবা অন্যায়! এদেশে ‘ক্ষমা একটি মহৎগুণ’ বাক্যটি পাঠ্যপুস্তকের পাতায় শোভা পায়। ‘ক্ষমা’ শব্দটি না আছে কোনো ব্যক্তির অভিধানে, না আছে কোনো সরকারের নথিতে। এই লেখক যখন নিবন্ধ লিখতে বসেছেন, তখন পর্যন্ত রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৩৫ এবং আহতের সংখ্যা অন্তত ১৬৫ জন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ট্র্যাজেডি