You have reached your daily news limit

Please log in to continue


প্রতিটি শিক্ষার্থী এক একটি ফুটন্ত গোলাপ

বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরের প্রতিটি কোণে আজ ভারী আর দীর্ঘশ্বাসের শব্দ। চোখের পানি ঝরছে তো ঝরছেই সেই কবে থেকে। গত বছর জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাজপথে ঝরে পড়েছিল। তাজা তাজা প্রাণগুলো বুলেটের আঘাতে নিষ্পেষিত হয়ে রাজপথে পড়ে ছিল। ‘আমায় অনেক বড় ডিগ্রি দিছে মা, এই ডিগ্রি বড় ভারী, মাগো বইতে নাহি পারি’—গানটা এখনো কানে বাজে। আজ এক বছর বাদে আবার একটা জুলাই এল, যেখানে একটা ফুলের বাগানের মতো পবিত্র জায়গা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটা আস্ত যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ল। সেই বাগানের ছোট্ট ছোট্ট ফুলগুলোকে কেউ যেন টেনে-ছিঁড়ে উপড়ে দিল। আহত মানুষের আহাজারি শোনা যায় না, আর এরা তো শিশু। যাদের স্কুলের জুতোটা পর্যন্ত মা-বাবাকে বেঁধে দিতে হয়। স্কুলের টিফিনের খাবারটা যেন ঠিকমতো খায় সেই কথা বারবার মনে করিয়ে দিতে হয়। সেই স্কুলের শিশুরা এত কষ্ট কীভাবে সহ্য করল আমি জানি না।

অনেক বছর আগে একবার শৈশবে আমার বাসায় একটা দুর্ঘটনা ঘটে, আর তাতে আমার ডান হাতটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তখন ঢাকা শহরে কোনো বার্ন ইনস্টিটিউট ছিল না। আমার বাবা তাঁর পাঁচ বছরের কন্যাশিশুটিকে কোথায় নিয়ে যাবেন বুঝতে পারছিলেন না। আমার আর্তচিৎকারে আমার বাবা পাগলের মতো হয়ে গেলেন। আমাকে কোলে নিয়ে ছুটে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমার মনে আছে জ্ঞান থাকা পর্যন্ত আমি শুধু সৃষ্টিকর্তাকে ডেকে যাচ্ছিলাম। এর পরের ঘটনা আরও ভয়াবহ। আমার ভুল চিকিৎসা হয়। তাতে আমার ইনফেকশন বেড়ে যায়। আমি খেতে পারি না, ঘুমাতে পারি না। তারপর আমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে একটি বছর লেগে যায়। তা-ও পুরোপুরি কোনো দিন আর আগের মতো স্বাভাবিক হয়নি। পোড়া হাত দেখলে সবাই ভয় পেত বলে ছোটবেলায় আমি আমার ডান হাত সহজে কাউকে দেখাতাম না। মানুষের করুণা আমার অপছন্দ, তাই সেই হাত নিয়ে কারও সামনে যেতাম না।

এত কথা বলার কারণ কাউকে আমার কষ্টের কথা শোনানো নয়, বরং এটা বলা যে এই শোক কেউ ভুলে যাবেন না। ঢাকা শহরের আকাশে যুদ্ধবিমান ওড়ে, এটাই আমার জানা ছিল না। যে ঢাকাকে আধুনিক নগরী বানাতে গিয়ে এত আয়োজন, সেখানে যুদ্ধবিমানকেও উড়িয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া লাগবে কেন আমি বুঝতে পারছি না।

শিক্ষক হিসেবে যখন আমি ছাত্রদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করি, তখন আমার মনে হয় প্রতিটি শিক্ষার্থী এক একটি ফুটন্ত গোলাপ, যারা শিক্ষা নামক আলো পেয়ে শুধু ফোটার অপেক্ষায় থাকে। আবার যখন তাদের সমস্যা নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলি, তখন তাদের উদ্বিগ্ন দেখলে বুঝতে পারি যে বাবা-মা মানে শুধু সন্তানের জন্ম দেওয়া নয়, অভিভাবক মানে ত্যাগ স্বীকার করা। কিন্তু এ কেমন ত্যাগ যে কোনো দিন আর সেই ‘বাবা-মা’ ডাকটাই শুনতে পাবেন না? এ কেমন জীবন, যে তাকে আর কখনো দেখতে পাবে না?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে আহতদের ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে। মোবাইল হাতে একদল বেরিয়ে পড়েছে ছবি তুলে ভিডিও দিয়ে ভিউ বাড়াতে। এমন বিপদে রাস্তায়, হাসপাতালে মানুষ নামক দর্শনার্থীদের ভিড় দেখলে অবাক লাগে ভাবতে, আমরা কোন সভ্যতায় বাস করি যেখানে কারও কষ্ট দেখার জন্য কেউ দাঁড়িয়ে থাকে? এমন দুর্ঘটনায় রাস্তাঘাট অচল করে দর্শনার্থীদের এমন আচরণ কম নিষ্ঠুর নয়। শিশুদের পাশে থাকার নামে তাদের পুড়ে যাওয়া দেহের ছবি প্রকাশ করার কোনো মানে হয় না। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আদালত যদি বিবেক হয়, তাহলে সেই আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মন থেকে নিহত-আহত সবার পাশে দাঁড়াই। প্রশ্ন করি, কেন এমন ঘটনা ঘটল? এই জায়গায় আমার সন্তান থাকলে কী করতাম আমি? টেলিভিশনের চ্যানেলগুলোতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে যেভাবে দাফনের মর্মান্তিক দৃশ্য ধারণ করাসহ লাইভে দেখানো হচ্ছে, তাতে কার কী উপকার হচ্ছে জানি না, তবে আমার মতে কিছুদিন চলার পর আমরা আবার যা ছিলাম তা-ই রয়ে যাব। ভুলে যাব আজকের দিনের এমন দুর্যোগের কথা। ঠিক যেমন রানা প্লাজার ঘটনা ভুলে গিয়েছি।
আনুষ্ঠানিকতাকে আমরা বড্ড বেশি জায়গা দিয়ে ফেলেছি। আবেগকে দিয়েছি প্রদর্শনের জায়গা। এমনটা যেন আর না হয় তার জন্য কী পদক্ষেপ আসে, তার বাস্তবতা দেখতে চাই। নাকি এমন হলো যে, চোখ খুলে দেখলাম

সময় কোথায়? সময় তো শেষ। বাংলাদেশের প্রতিটা শিশু আপনার-আমার সন্তান। আমরা সবাই তাদের হেফাজতের জন্য একত্রে কাজ করব। কারও কষ্ট দেখে শুধু বিলাপ করার সময় এটা নয়। আপনার-আমার সবার দায়িত্ব এই দুর্যোগে আর্তদের সাহায্য করা। কিছু করতে না পারলে অন্তত দোয়া করি—মহান সৃষ্টিকর্তা যেন সব সময় আমাদের সন্তানদের পাশে থাকেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন