পরিবার মানুষের ব্যক্তিত্ব গঠনের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান। মানবজীবনের মৌলিক বিষয়গুলোর হাতেখড়ি হয় এখানেই। একটি শিশু কেবল ভাষা নয়, শেখে কীভাবে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। এটি কেবল একটি সামাজিক সংগঠনের একক নয়, বরং নৈতিকতা, মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ ও শৃঙ্খলার প্রাথমিক পাঠশালা। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের মতে, রাষ্ট্র পরিবারের সম্প্রসারিত রূপ। কাজেই একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে চাইলে আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে দেশের প্রতিটি পরিবারকে। আদর্শ পরিবার গড়ে তোলার জন্য, যাতে করে সুনাগরিক ও সুশাসক তৈরির প্রাথমিক প্রক্রিয়াটি যেন পরিবারেই শুরু হয়।
আমাদের মনে রাখতে হবে, পারিবারিক পরিবেশে যদি মানবিকতা, ন্যায়বোধ ও শৃঙ্খলা চর্চা করা হয়, তবে তা ব্যক্তি-মানসে গভীরভাবে প্রোথিত হয়ে বৃহত্তর সমাজ ও রাষ্ট্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যে সমাজে পরিবারভিত্তিক নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি দৃঢ়, সেখানে সুসংগঠিত, দায়িত্বশীল এবং সুশাসনমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণেও রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক সংস্কারের পূর্বশর্ত হিসাবে পারিবারিক শিক্ষার উন্নয়নকে একটি জরুরি ও প্রাথমিক অগ্রাধিকার হিসাবে গ্রহণ করতে হবে।