মাদকদ্রব্য রোধ করা কীভাবে সম্ভব

প্রথম আলো মো. খালিদুল হক হাওলাদার প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৫, ১৩:০৮

আজ আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস, অর্থাৎ মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৭ ডিসেম্বর ১৯৮৭ তারিখে সিদ্ধান্ত নেয় যে প্রতিবছর ২৬ জুন আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস (মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস) পালন করা হবে। ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমস (ইউএনওডিসি) জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক কার্যালয় অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নেতৃত্ব দেয়।


ইউএনওডিসি ১৯৯৭ সালে গঠিত হয়েছিল এবং সারা বিশ্বে এর অফিস রয়েছে। ২০১৬ সালে সাধারণ পরিষদে মাদকসংক্রান্ত একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মাদকের অপব্যবহার এবং আসক্তি মানুষের জীবনে এবং সামাজিক শান্তি, উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধির ওপর যে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে, তা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে ২৬ জুন দিবসটি পালিত হয়। এই দিবসের মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বকে মাদকমুক্ত করে তোলা।


এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো:


১. সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে সহযোগিতা: জাতিসংঘ বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্রকে মাদক সমস্যা মোকাবিলায় প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।


২. সচেতনতা বৃদ্ধি: জাতিসংঘ বিভিন্ন প্রচার ও শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে মাদকাসক্তির কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করে।


৩. মাদকবিরোধী তহবিল: মাদক সমস্যা মোকাবিলায় জাতিসংঘ একটি তহবিল গঠন করেছে, যা মাদকবিরোধী কার্যক্রম এবং গবেষণার জন্য অর্থায়ন করে।


জাতিসংঘের এই উদ্যোগগুলো মাদক সমস্যা সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করে। মাদক বা নেশা উদ্রেককারী পদার্থগুলোকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:


১. অবসাদকারক (ডিপ্রেশান্ট): মরফিন, হেরোইন।


২. উদ্দীপনকারক (স্টিমুল্যান্ট) : অ্যাম্পেটামিন, ক্যাফেইন।



নেশা উদ্রেককারী পদার্থগুলো স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত করে। ফলে মানবদেহে নানা ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করে। যার ফলাফল দাঁড়ায় অকালমৃত্যু।


বাংলাদেশে মাদকের প্রচলন আলোচনা করতে হলে পেছনে ফিরে তাকাতে হবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত গাঁজাসহ বিভিন্ন রকমের মদ ছিল সাধারণ মাদক। রাজস্ব আদায়ে সরকারি নিবন্ধিত দোকানেও বিক্রি হতো গাঁজা ও আফিম।


আশির দশকের শেষ দিকে গাঁজা নিষিদ্ধ হলে এর জায়গা দখল করে হেরোইন। তবে নিষিদ্ধ হওয়ার পর গাঁজার বাজার আরও বড় হয়। কয়েক বছর পর কাশির ওষুধ হিসেবে পরিচিত ফেনসিডিল বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা পায়, যা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে। ২০০০ সাল পর্যন্ত ফেনসিডিল ছিল সবচেয়ে প্রচলিত মাদক। পরবর্তী সময়ে ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক গ্রহণের প্রবণতা বাড়ে। ফেনসিডিল ও হেরোইনের জায়গা নেয় ইনজেকশন জাতীয় মাদক।


২০০০ সালের পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে সিনথেটিক ড্রাগ। ২০০৫ সালের পর তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে সস্তা মাদক হিসেবে ড্যান্ডির প্রচলন বাড়ে। এটি বেশি সেবন করে পথশিশুরা।


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিস্টাল মেথ, এলএসডি, ডিওবি, এমডিএমের মতো মাদক শহরের তরুণেরা সেবন করছে। বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম এসব মাদকের বিস্তার সহজ করেছে। এখন কিশোর ও শিশুদের মধ্যেও মাদক সেবনের প্রবণতা বেড়েছে।


২০২২ সালে প্রকাশিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) একটি গবেষণায় বলা হয়, দেশে ৫৮ শতাংশ পথশিশু মাদকে আসক্ত। ১৪ শতাংশ শিশু ১০ বছর বয়সের আগেই মাদক সেবন করে। তুলনামূলক সহজলভ্য ও সস্তা হওয়ায় পথশিশুদের মধ্যে ৩১.৭ শতাংশ গাঁজা সেবন করে। ড্যান্ডিতে আসক্ত ১৫.২ শতাংশ শিশু।


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতেই ড্যান্ডিতে আসক্ত পথশিশুর সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। এই শিশু–কিশোর ছাড়াও বাংলাদেশে প্রায় ৭ মিলিয়নের বেশি মানুষ কোনো না কোনোভাবে মাদকের সঙ্গে যুক্ত। ৮০ শতাংশ মাদকাসক্ত কিশোর ও তরুণ বয়সী মানুষ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও