নিখোঁজ হওয়ার পর এক সময় নিজেকে প্রতিবেশী দেশ ভারতের মাটিতে খুঁজে পান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর জন্য ঈদ কোনো উৎসব ছিল না। ছিল না নতুন পোশাক, নাড়ির টান কিংবা প্রিয়জনের হাসিমুখ। বরং ঈদ হয়ে উঠেছিল এক দীর্ঘ অপেক্ষা, একাকিত্ব আর বেদনার প্রতিচ্ছবি।
জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে সালাহউদ্দিন আহমেদ ফিরে দেখেছেন তার শৈশবের ঈদ, প্রতিমন্ত্রী থাকার সময়ের ঈদ এবং সেই হৃদয়বিদারক নির্বাসনের ঈদগুলো—যেখানে প্রিয় মুখগুলো ছিল কেবল স্মৃতির পাতায়।
শুরু করি একেবারে ছোটবেলার গল্প দিয়ে। আপনার শৈশবের ঈদ কেমন ছিল?
সালাহউদ্দিন আহমেদ: বাল্যকালের স্মৃতি তো এখন তেমন মনে নাই। বাল্যকালের ঈদের আনন্দ সবার যেমন উৎসবমুখর হয়, আমারও তেমন ছিল।
আপনি যখন নিখোঁজ ছিলেন, ভারতে ছিলেন—সেই সময় ঈদ এসেছে, ঈদ গেছে। সেই ঈদগুলো কেমন ছিল? সবচেয়ে কষ্টের কিংবা সবচেয়ে অবিস্মরণীয় কোনো ঈদের কথা কি মনে পড়ে?
সালাহউদ্দিন আহমেদ: ভারতে নির্বাসিত জীবনে ৯ বছরের বেশি সময় ছিলাম। কমবেশি ১৮টা ঈদ ওখানে আমাকে উদযাপন করতে হয়েছে—পরিবার-পরিজনবিহীন, আত্মীয়-স্বজনবিহীন, বন্ধু-বান্ধববিহীন। সেই উদযাপনটা আসলে ঈদ উদযাপন বলা যায় না। আমি ওখানে ঈদের সময় কাটাতে বাধ্য হয়েছি। দু-একটা ঈদের সময় আমার পরিবার আমাকে দেখতে গিয়েছিল। আমার সন্তানরা সবাই একত্রে যেতে পারেনি। আমার চার সন্তানের মধ্যে কোনো সময় দুজন গেছে, কোনো সময় একজন গেছে। সেরকম হয়তো দুই-একবার আমার স্ত্রীসহ গেছে। নির্বাসিত জীবনের যে বেদনা, সেটা সঙ্গে নিয়েই ঈদের সময় কেটেছে। ওইখানে অনেকদিন থাকার কারণে আমার পরিচিত কিছু লোকজন হয়ে গিয়েছিল, ছোট একটা সার্কেল। তাদের সঙ্গে ঈদের সময় শুভেচ্ছা বিনিময়, ঈদের আনন্দ-বেদনাগুলো ভাগাভাগি করেছি।
দীর্ঘ নির্বাসনের পর বাংলাদেশে ফিরে প্রথম ঈদ কেমন কাটিয়েছেন? গ্রামের বাড়িতে পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সালাহউদ্দিন আহমেদ: বাংলাদেশে আসতে পারার পরে একটা ঈদ আমার গ্রামের বাড়িতে—গ্রামের মানুষ, আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন সবাইকে নিয়ে উদযাপন করতে পেরেছি। সামনে হয়তো ঈদগুলো আগে যেভাবে করতাম—আমার রাজনৈতিক জীবনে যখন আমি এমপি ছিলাম, মন্ত্রী ছিলাম বা তারও আগে যে সময়টা বাংলাদেশে কাটাতে পেরেছি—সবাইকে নিয়ে সেরকম উদযাপন সামনে হবে, ইনশাআল্লাহ এটা আশা করি।