অধ্যাপক ইউনূস থাকছেন, সংকট কতটা কাটল

প্রথম আলো এ কে এম জাকারিয়া প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৫, ১৩:০৪

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করছেন না, এটা আপাতত পরিষ্কার। কেউ তাঁর পদত্যাগ চাননি, তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন হতাশা ও বিরক্তি থেকে। তাঁর হতাশার কারণ সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মহলের অসহযোগিতা। সংবাদমাধ্যমে এমনই খবর হয়েছে। 


গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সব শক্তি একমত হয়ে অধ্যাপক ইউনসূকে দায়িত্ব দিয়েছিল। এখন তিনি যদি নিজের মতো কাজ করতে না পারেন, অসহযোগিতার মুখে পড়েন, তাহলে পদত্যাগের ভাবনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেই ভাবনা থেকে তিনি সরে আসায় একটা স্বস্তি এসেছে; কারণ, তাঁর পদত্যাগ নিশ্চিতভাবেই অনিশ্চয়তা বাড়াত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সংকট কতটা কাটল?


পরিস্থিতি হঠাৎ যে সংকটময় হয়ে উঠল, এর কিছু কারণ পুরোনো। যেমন বিভিন্ন ইস্যুতে মব তৈরি, ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং প্রায় প্রতিদিনই রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক কোনো না কোনো দাবিতে রাস্তা অবরোধ। সরকার এগুলো সামাল দিতে পারেনি। এই অব্যাহত মব সংস্কৃতি নিয়ে মানুষের বিরক্তি চরমে পৌঁছেছে। এর সঙ্গে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ নিয়ে বিএনপির অব্যাহত চাপ এবং এ নিয়ে সরকারের নির্বিকার অবস্থান দুই পক্ষের মধ্যে ক্রমাগত দূরত্ব বাড়িয়েছে।


এখন নতুন পরিস্থিতি হচ্ছে, ইশরাকের মেয়র পদ ইস্যুতে বিএনপির রাজনৈতিক শক্তি প্রমাণের চেষ্টা। এ নিয়ে মুখোমুখি হয়ে পড়ে বিএনপি ও এনসিপি। দুই পক্ষ থেকেই কয়েকজন উপদেষ্টার পদত্যাগের পাল্টাপাল্টি দাবি ওঠে।


পাশাপাশি মিয়ানমারকে মানবিক করিডর দেওয়া না-দেওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি এবং চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতিবাচক অবস্থান দেশের রাজনীতিকে উত্তপ্ত করে তোলে। এ পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় ঢাকা সেনানিবাসে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’-এ দেওয়া সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য। সেখানে নির্বাচন, করিডর, বন্দর নিয়ে সেনাপ্রধান তাঁর অবস্থানের কথা জানান। এর মধ্য দিয়ে সরকারের সঙ্গে সেনাপ্রধানের অবস্থানের পার্থক্য স্পষ্ট হয়।


এসব নানা ঘটনার পটভূমিতেই গত বৃহস্পতিবার রাতে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য ‘পদত্যাগ’ ভাবনার খবর আলোচনায় আসে। এ বিষয়ে জল্পনা-কল্পনার অনেকটাই অবসান ঘটে শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা পরিষদের দেওয়া বিবৃতির মাধ্যমে। উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত এক বৈঠক শেষে এই বিবৃতি দেওয়া হয়। আমরা বুঝতে পারলাম অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন না।


বিবৃতি অনুযায়ী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংস্কার, বিচার, নির্বাচন-অন্তর্বর্তী সরকারের এই তিন প্রধান দায়িত্বের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই সূত্রে, ‘এসব দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অযৌক্তিক দাবিদাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ারবহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে,’ তা নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যদি পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তোলা হয়, তবে সরকার সব কারণ জনসমক্ষে উত্থাপন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’


বিবৃতিটি বিবেচনায় নিলে আমরা বুঝতে পারি যে অন্তর্বর্তী সরকার সম্ভবত বর্তমান পরিস্থিতিতে দৃঢ় অবস্থান এবং কঠোরভাবেই তা মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু শুধু দৃঢ় থাকা বা কঠোর হওয়াই কি সব? নাকি গণ-অভ্যুত্থানের বিভিন্ন অংশীপক্ষের মধ্যে যে বিরোধ ও বিভক্তি তৈরি হয়েছে, তা দূর করার উদ্যোগও নেবে অন্তর্বর্তী সরকার। অথবা নিজেদের সঙ্গেও যেন কোনো পক্ষের বিরোধ না হয়, সে ব্যাপারেও সচেষ্ট থাকবে অন্তর্বর্তী সরকার।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও