শিগগির দেশকে নির্বাচনী উৎসবের দিকে নিতে হবে

প্রথম আলো আলতাফ পারভেজ প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২৫, ১০:৩৪

দক্ষিণ এশিয়ার জাতিসত্তাগুলোর মধ্যে সর্বাগ্রে ঔপনিবেশিক সীমান্তছক পেরিয়ে নিজস্ব ধাঁচের রাষ্ট্র গড়তে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ জাতি ও বিশ্বাসকেন্দ্রিক শ্রেষ্ঠত্ববাদ অতিক্রম করা এক গণরাষ্ট্র হয়ে আশপাশের অন্যান্য জাতিকেও মুক্তির পথ দেখাবে। বাংলাদেশের জন্ম ভারত ও পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র-ঐতিহ্যকে বড় মুশকিলে ফেলেছে।


‘রাষ্ট্র’ গঠন ও পুনর্গঠনে একাত্তরের অঙ্গীকারগুলোই আবার জীবন্ত হয়েছে ‘৩৬ জুলাই’য়ের আগে-পারে। সমকালে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের জন্য এত সফল নির্দলীয় জাতীয় জাগরণের নজির নেই। ‘বাংলাদেশ মডেল’ স্বৈরশাসকদের জন্য একটা বৈশ্বিক বার্তা দিয়েছিল।


কিন্তু প্রায় ১০ মাস পর আমরা কোথায় এসে দাঁড়ালাম? গণ অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশ আয়নায় কী দেখছে?


স্বপ্ন ছিল গণতন্ত্রের উন্নত এক নিরীক্ষার, কিন্তু মিলছে নিরন্তর চলমান এক মবতন্ত্র। সবাই চেয়েছিল বৈষম্যের প্রাচীরগুলো ধ্বংসের কাজ তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হবে। কিন্তু এরই মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য প্রশ্নবিদ্ধ ও ধোঁয়াশা হলো অনেকখানি। ‘বিপ্লব’ পুরো বেহাত না হলেও ধুঁকছে। প্রতিদিন শিশুসুলভ গোঁয়ার্তুমিতে রাজধানীর জনজীবন জিম্মি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা বাগ্‌যুদ্ধ পেরিয়ে রাজপথেও পরস্পরের মহড়া দিতে নামছে। গণ-অভ্যুত্থানের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সম্মতি ও সমর্থনে যে অন্তর্বর্তী সরকার হয়েছে, তার দুই উপদেষ্টার বিদায় চাচ্ছে এক পক্ষ, অন্য পক্ষ সরাতে চাচ্ছে অন্য তিন উপদেষ্টাকে। ৩৬ জুলাইয়ের এই মরণদশায় খোদ রাষ্ট্রকেও আমরা নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে ফেলছি। শক্তিধর দেশগুলোর পাশা খেলায় বুঝে না বুঝে বাংলাদেশকে পক্ষ-প্রতিপক্ষ বানানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। প্রতিনিধি বাছাইয়ের সুযোগহীন জনতা বোবা-বিরক্তি নিয়ে অনির্বাচিত জাতীয় নেতাদের এসব প্রয়াস দেখছেন। তসবিহ গণনার মতো প্রহর গুনছেন নির্বাচনের। তাদের অবিলম্বে এমন রাজনৈতিক সরকার চাই, যারা কেবল প্রত্যাশার বাণী শোনাবে না, জবাবদিহি করবে।


নির্বাচিত প্রশাসনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ


অধিকাংশ মানুষ এখন আর রাষ্ট্র সংস্কারের কথামালায় আস্থা রাখতে পারছে না। তাদের উৎসাহ প্রায় মৃত। তারা ব্যবসা-বাণিজ্যের সংকোচনে পীড়িত। সর্বত্র বেকারত্ব বাড়ছে। কৃষির প্রধান মৌসুমের ফলন নিরাপদে গোলায় উঠলেও শিল্পের অশনিসংকেতের আঁচ গেছে শহরতলিতেও। স্থানীয় সরকার নেই। জাতীয় সরকারও নেই। অথচ মানুষের বুকে চিৎকার করে বলার মতো অনেক কথা।


অভ্যন্তরীণ জরুরি কাজ বাদ দিয়ে সীমান্ত করিডর, বন্দর ইজারার মতো বাড়তি বিতর্কে মানুষ কিছু বলতে চায় এখন। তাই জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন প্রয়োজন। জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আকারে-ইঙ্গিতের চৌহদ্দি ছেড়েও সেই প্রয়োজনের কথা বলছে।


নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মাঠপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের বড় কাঠামো রয়েছে। তারা বুঝতে পারছে দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ সামাজিক নিরাপত্তাকাঠামো ভেঙে পড়তে চলেছে। ১৭ কোটি মানুষের রাজনৈতিক অভিভাবকহীন সমাজকে পাহারা দেওয়া ধাপে ধাপে দায়িত্ব পাওয়া কয়েক হাজার সৈনিকের কাজ নয়। সৈনিক-জনতার সেই মৈত্রীকেও প্রাতিষ্ঠানিকতা না দিয়ে ক্রমাগত ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। সিভিল-মিলিটারি সম্পর্ক গণ-অভ্যুত্থানের ৮-১০ মাসে কাদের স্বার্থে ও কাদের দ্বারা এত নাজুক অবস্থায় ঠেলে দেওয়া হলো, সেই প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।


নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে দীর্ঘদিন মাঠে রেখে দেওয়ায় পুরো প্রতিরক্ষাকাঠামো ইতিমধ্যে তার বার্ষিক মানোন্নয়নে পিছিয়ে পড়ছে এবং সেটা নানান সামাজিক দূষণের শিকার হয়ে পড়ারও শঙ্কায় আছে। ১৯৯০ ও ২০২৪–এর জনজাগরণ বাংলাদেশকে যেখানে নিয়ে এসেছে, সেই সমাজকে সামরিক পথে নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ। একে যেকোনো মূল্যে দ্রুত নির্বাচনী গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক পথে চালিত করা জরুরি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও