জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়লে সবকিছুর দাম বাড়ে। জ্বালানির দাম নির্ধারণে সরকারের পলিসি বরাবরই অস্পষ্ট। বিগত সরকারের আমলে অনেকবার এমন হয়েছে যে, বিশ্ববাজারে যখন তেলের দাম চড়া, সরকার তখন ভর্তুকি দিয়ে দাম কমিয়ে রেখেছে। আবার বিশ্ববাজারে দাম কমে গেলে হঠাৎ করে ভর্তুকি তুলে নিয়ে আরও নানা রকম ডিউটি ও চার্জ যোগ করে এক ধাক্কায় দেড়গুণ দাম বাড়ানো হয়েছে। ঠিক কোন্ নীতিমালা অনুসারে এই বাড়ানো-কমানোর খেলা চলেছে, তা সাধারণ নাগরিকদের কাছে খোলাসা করা হয়নি।
উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দেওয়ার জন্য ব্যাংকিং সেক্টরসহ গোটা আর্থিক খাতকেই খোকলা বানিয়ে দেওয়ার পর দেশ চালাতে সরকারকে নির্ভর করতে হয়েছে বৈদেশিক সাহায্য ও চড়াসুদের ঋণের ওপর। পদ্মা সেতু ইসুতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতির পর বিকল্প দাতা সংস্থাগুলোর প্রতি না ঝুঁকে শেখ হাসিনার কি উপায় ছিল না? জানা গিয়েছিল, আইএমএফ, আইডিবি, এডিবি, জাইকা এ রকম প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জাইকা ছাড়া প্রত্যেকের ঋণের শর্ত ছিল খুবই কঠিন। দাঁতে দাঁত চেপে নাকি সেসব মেনে নিতে হয়েছে হাসিনাকে, নয়তো বাইরে যেমনটাই বলা হোক না কেন, ভেতরে ভেতরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একেবারেই তলানিতে ঠেকে গিয়েছিল, শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা হতে তেমন একটা বাকি ছিল না। একটার পর একটা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার আড়ালে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের সীমাহীন দুর্নীতি এবং অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার, করোনা মোকাবিলায় সাধ্যের অতিরিক্ত ব্যয় এবং আরও নানা কারণে আর্থিক খাত পুরোপুরি ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছিল।