এত চাপ কি সামলাতে পারবেন ট্রাম্প

www.ajkerpatrika.com এম আর রহমান প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৮

খোদ নিজের দেশে এমন কঠিন সমস্যায় পড়বেন তা হয়তো স্বপ্নেও চিন্তা করেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত রোববার দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যের সব কয়টি উত্তাল হয়ে ওঠে ট্রাম্প ও তাঁর প্রধান চ্যালা ইলন মাস্কবিরোধী বিক্ষোভে। ১ হাজার ৪০০-এর বেশি স্থান তাঁদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে কেঁপে ওঠে। ‘হ্যান্ডস অফ!’ নামের এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। তারা সবাই ট্রাম্পের পদত্যাগ দাবি করেছে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে শুরু করে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেসসহ প্রধান শহরগুলোতে বড় বড় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন শহরেও সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষোভ হয়েছে। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে নিজ দেশে এ ধরনের বিক্ষোভ সম্ভবত এটাই প্রথম।
তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প যা শুরু করেছেন, তাতে এ ধরনের প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনিবার্য ছিল। তিনি দেশে-বিদেশে যেসব নতুন বন্দোবস্ত চালু করার পরিকল্পনা আগেই ঘোষণা করেছিলেন, এখন ক্ষমতায় বসে তার বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। আর শুরুটা অনেকটা কালবৈশাখীর মতো হয়ে এসেছে সাধারণ মানুষের কাছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে সবার জীবন। ফলে প্রতিবাদটা অনিবার্য ছিল। কিন্তু ক্ষমতায় বসার ৮০ দিনের মধ্যে এমন প্রতিবাদের মুখে পড়বেন তা বোধ হয় ট্রাম্প বা তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা ভাবতে পারেননি।

পারবেন কীভাবে? তাঁরা ক্ষমতার মধু খেতে বসেই অন্যের রুটি-রুজিতে হাত দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কাজ করা ব্যক্তিরা জানেন না আগামীকাল তাঁদের চাকরি থাকবে কি না। এত অনিশ্চয়তা জীবনে হঠাৎ ভর করলে কার মাথা ঠিক থাকে? শুধু কি তা-ই? ট্রাম্প ও তাঁর বড় চ্যালা মাস্ক সবাইকে অযোগ্য বিবেচনা করছেন। তাঁদের প্রতি সহানুভূতি দূরে থাকুক, বরং বিদ্বেষ কাজ করছে। লোকরঞ্জনবাদী ট্রাম্পের ভালো দিনের অপেক্ষায় একটু তো ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে। কী আশ্চর্য! ভালো দিন আসা পর্যন্ত টিকে থাকতে পারবে—এ বিশ্বাস মার্কিন জনগণ করে না। তাই একেবারে তারা রাস্তায় নেমে পড়েছে।

ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প প্রশাসন ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ (ডিওজিই) প্রতিষ্ঠা করে সে দেশের ধনকুবের ইলন মাস্ককে এর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। এই সংস্থার অধীনে মাত্র তিন মাসের মধ্যে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৪৫ জনকে ফেডারেল চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৭২ শতাংশ বেশি।


এ ছাড়া অভিবাসী বিতাড়ন, স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার এবং সামাজিক সেবা বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ জনগণ। সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ভোক্তা সুরক্ষাসংক্রান্ত পরিষেবাগুলোতে ব্যাপক কাটছাঁট করেছে ট্রাম্পের প্রশাসন। এই পদক্ষেপগুলো সাধারণ মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর। ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট সংস্থার মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপক গ্রেপ্তার ও নির্বাসন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথম ৫০ দিনে ৩২ হাজারের বেশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা অভিবাসীদের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন এসব পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা হরণ করছে। বিক্ষোভ সমাবেশগুলোতে লাখ লাখ মানুষের মুখে ছিল একটাই কথা, ‘আমেরিকার কোনো রাজা নেই। আমেরিকায় ফ্যাসিবাদ চলবে না।’ এই কথাটা নির্বাচনের আগে যদি অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক বুঝতেন তাহলে ভালো হতো। তবে এটাও সত্যও যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জিতলে বিশ্ব আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠত। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবাজ ভূমিকা আরও আগ্রাসী রূপ নিতে পারত।


এখন ‘হ্যান্ডস অফ’ কর্মসূচিকে সরাসরি সমর্থন করেছেন কমলা হ্যারিসও। ট্রাম্প-প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রশংসা করেছেন তিনি। রোববার মাস্ককে কটাক্ষ করে কমলা নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘আজ আমাদের দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন আমেরিকানরা। সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। বিক্ষোভকারী শ্রমজীবী মানুষের কণ্ঠস্বর এসব “অনির্বাচিত ধনকুবেরদের” কণ্ঠকে ছাপিয়ে যাক।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও