
ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও আমাদের প্রস্তুতি
‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’—এই স্লোগানে চেপে আমেরিকায় দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট পদে বসেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুরু থেকেই যে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফের কথা বলে এসেছেন তিনি। ২ এপ্রিল সেই শুল্ক চাপিয়ে তার কথা মাফিক কাজ করেছেন তিনি। ট্রাম্পের রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ হলো যে দেশ আমেরিকার পণ্যে যতটা শুল্ক চাপাবে, সেই দেশের পণ্যে পাল্টা তার উপযুক্ত পরিমাণ শুল্ক চাপাবেন তিনি।
২০২৪ সালের নভেম্বরে নির্বাচন জিতে মসনদে বসেই এই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। এই শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরপরই বিশ্ব দেখলো ভিন্ন একটি চিত্র। প্রবল ধাক্কা খেয়েছে আমেরিকার শেয়ার বাজার, শঙ্কিত হয়েছে বাণিজ্য মহল ও কালো ছায়া পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। মনে হচ্ছে রীতিমতো শুল্কযুদ্ধের ডঙ্কা বাজিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প ট্যারিফ বা শুল্ক কী?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর রকমের পণ্য যায় আমেরিকায়। সেই সব পণ্যের উপর ধার্য হয় আমদানি শুল্ক। যা ইমপোর্ট ডিউটি নামেও পরিচিত। এবার সেই শুল্কই বৃদ্ধি করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন যে শুল্ক চাপানোর ঘোষণা তিনি দিয়েছেন মূলত তাই হলো ট্রাম্প ট্যারিফ। শুল্ক বাবদ আদায় হওয়া টাকা যাবে মার্কিন কোষাগারে। ট্রাম্প প্রশাসনের ধারণা এর জেরে আমেরিকার সরকারের আয় বাড়বে বহুগুণ।
শুল্ক আরোপ নিয়ে ট্রাম্পের যুক্তি:
১. বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মার্কিনি পণ্যে যে হারে কর চাপায় তা অন্যায্য। কারণ ওই সব দেশের পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপানো আমদানি শুল্কের হার অনেক কম। এই দূরত্ব ঘোচাতেই রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বসাচ্ছেন বলে দাবি ট্রাম্পের।
২. আমেরিকার ঘরোয়া উৎপাদন বা ডোমেস্টিক ম্যানুফ্যাকচারিং বাড়ানোর উদ্দেশ্যেও এই শুল্ক চাপানোর কথা সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বার বলে বেড়িয়েছেন ট্রাম্প। বিদেশি পণ্যে শুল্ক বসানোর জেরে সেগুলোর দাম বেড়ে যাবে মার্কিন বাজারে। এর জেরে আমদানি কমিয়ে আমেরিকার অভ্যন্তরে বেশি পণ্যের উৎপাদনের চেষ্টা চলবে, এটাই ট্রাম্পের ইচ্ছা।
৩. আমদানি শুল্ক বসানোর মাধ্যমে সরকারের আয় বাড়াতে চাইছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। শুল্কের মাধ্যমে আয় বাড়িয়ে নাগরিকদের আয়কর-এ ছাড়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনার কথাও শুনিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।