স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের কারণে ওষুধশিল্প কি ঝুঁকিতে পড়বে?

ঢাকা পোষ্ট ড. মো. আজিজুর রহমান প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৪:৪৪

বাংলাদেশ সরকার আগামী বছরের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এর ফলে দেশের শিল্পখাত বিশেষ করে ওষুধ, গার্মেন্টস ও চামড়াশিল্প বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে বলে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন। এ লেখায় আমি মূলত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ফলে ওষুধ শিল্পের উপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে তা তুলে ধরবো। 


মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে স্বল্পোন্নত দেশ (Least Developed Country) কাকে বলে এবং ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ’  (LDC Graduation) বলতে কী বোঝায় তা একটু আলোকপাত করা জরুরি। কারণ, এ নিয়ে অনেকের ধারণা স্পষ্ট নয়।


স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা প্রণয়ন করে জাতিসংঘ। একটি দেশ ‘স্বল্পোন্নত দেশ’ হিসেবে জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত হয় যদি দেশটির—১) তিন বছরের গড় মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় (GNI) ১০৮৮ মার্কিন ডলার বা তার কম হয়,


২) মানব সম্পদ সূচকের (human assets index বা HAI) স্কোর ৬০ বা এর নিচে হয়,


এবং ৩) অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকের (economic and environmental vulnerability index বা EVI) মান ৩৬ বা তার বেশি হয় (সূত্র: unctad.org/topic/least-developed-countries/list)।


স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত হওয়া সম্মানের বিষয় নয়। জাতিসংঘের সদস্য ১৯৩টি দেশের মধ্যে বিশ্বের গরিব ও ঝুঁকিপূর্ণ ৪৪টি দেশ এ তালিকাভুক্ত। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অধিকাংশই আফ্রিকা মহাদেশের। এশিয়ার মাত্র আটটি দেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত। এগুলো হলো বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, নেপাল, ইয়েমেন, লাওস, লেসেতে ও কম্বোডিয়া। ভারত ও পাকিস্তান কখনোই এ তালিকাভুক্ত ছিল না। অনেক দরকষাকষির পর ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘ কর্তৃক এলডিসি’র তালিকাভুক্ত হয়।


স্বল্পোন্নত দেশের তালিকাভুক্ত হতে যেমন তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হতে বা এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েট হতেও তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়—১) মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় ১৩০৬ মার্কিন ডলার বা তার বেশি হতে হয়,


২) মানব সম্পদ সূচকের স্কোর ৬৬ বা তার উপরে হতে হয়


এবং ৩) অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকের মান ৩২ বা তার নিচে হতে হয় (সূত্র: UNCTAD)।


এ তিনটি শর্তের যেকোনো দুটি পূরণ করলেই কোনো দেশ গৌরবের সাথে এলডিসি তালিকা থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করে।


এলডিসি তালিকা থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করা বেশ সম্মানের কারণ এর ফলে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়, গরিব বা স্বল্পোন্নত দেশের তকমা থাকে না এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সক্ষমতার কারণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের সম্ভাবনা বাড়ে।


দশ বছরে মানুষের মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় বৃদ্ধি, মানব সম্পদ সূচকের উন্নতি এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ দুইবার (২০১৮ ও ২০২১ সালে) এলডিসি তালিকা থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করার বা উত্তরণের শর্ত পূরণ করে। বাংলাদেশের ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বের হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে প্রস্তুতির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার আরও দুই বছর পিছিয়ে উত্তরণের জন্য ২৪ নভেম্বর ২০২৬ নির্ধারণ করে।


দেশের পট পরিবর্তনের পর প্রথম দিকে অন্তর্বর্তী সরকার এলডিসি থেকে উত্তরণের দিন পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছিল। কিন্তু ১৩ মার্চ ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় ‘২০২৬ সালের নভেম্বরেই বাংলাদেশে এলডিসি থেকে উত্তরণ হবে’—এরকম সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের কারণে যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে, তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা প্রদান করেন (প্রথম আলো, ১৪ মার্চ ২০২৫)।


এখন মূল আলোচনায় আসা যাক। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ হলে দেশের যে কয়টি সেক্টর চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে তার মধ্য অন্যতম হলো ওষুধ সেক্টর। এর কারণ হলো, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ২০০১ সাল থেকে ‘Compulsory licensing’ এবং ‘Parallel importing’ এর সুবিধা পেয়ে আসছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও