
জীবনের বাস্তবতাই মূলত ‘রাজনৈতিক বাস্তবতা’
আশির দশক; পুরান ঢাকার শ্যামাপ্রসাদ চৌধুরী লেনের যুবক আবদুল মজিদের স্যান্ডেলের ফিতে যখন ফট করে ছিঁড়ে যায়, তখন আবদুল মজিদ শুনতে থাকে সেই কণ্ঠস্বর। বদু মওলানা ফিরে এসেছে।
১৯৭১ সালে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে বদরুদ্দিন ওরফে বদু মাওলানা চালিয়েছিল নির্মম ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ। কিশোর আবদুল মজিদের বোন মোমেনাসহ আরও অনেককে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল বদু।
স্বাধীন বাংলাদেশে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় পুনর্বাসিত হয়েছে তারা। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের এই কাহিনিই আছে ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ উপন্যাসের ছত্রে ছত্রে।
শহীদুল জহিরের লেখা এই উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের নির্মমতার পাশাপাশি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের জনমানুষের জীবনের বাস্তবতাও তুলে এনেছে বলে মনে করছেন সাহিত্য বিশ্লেষকরা।
তবে ‘উপন্যাসটি নন্দনতাত্ত্বিক জায়গা থেকে চমৎকার হলেও ভাবাদর্শিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে সন্তোষজনক নয়’ বলে মনে করেন কোনো কোনো সাহিত্যবোদ্ধা।
শহীদুল জহির নিজে অবশ্য এ নিয়ে খুব বেশি বলেননি। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমার ভয় ছিল পাঠক এটা বুঝবে কি বুঝবে না। এটা অনেক সময় লেখক হিসেবে আমার ভয় থাকে।”