বিএনপির সামনে সুযোগ অনেক, কিন্তু...

প্রথম আলো সালেহ উদ্দিন আহমদ প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৫, ২০:২০

বিএনপি এখন দেশের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী রাজনৈতিক দল। অন্য বড় দল আওয়ামী লীগ রাতারাতি উধাও হয়ে যাওয়ার পর বিএনপির সুযোগ বেড়েছে; সঙ্গে তাদের নতুন চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিএনপির বলয়ের বাইরে গণ্য করার মতো এখন রয়েছে আর মাত্র দুটি দল—নবগঠিত এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী। এনসিপি হাঁটিহাঁটি পা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তাদের দল গোছাতে অনেক কাজ বাকি। জামায়াতে ইসলামী জুলাই বিপ্লবের পর কিছুটা হাঁফ ছাড়লেও, একাত্তরের সত্যগুলো কিছুতেই তাদের পিছু ছাড়ছে না। নির্বাচন যতই কাছে আসবে, এসব দলের অবস্থান নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা হবে। তবে আজকের আলোচনা বিএনপির দলীয় অবস্থান নিয়ে। আমরা কথা বলব বিএনপির শক্তি, দুর্বলতা, কৌশল ও ভবিষ্যৎ নিয়ে।


পরিপক্বতা


বিগত বছরগুলোতে বিএনপিকে অনেক প্রতিকূলতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সইতে হয়েছে। বিএনপি রাজনীতির একটা দিক প্রশংসা করার মতো, ১৫ বছর অনবরত মার খাওযার পরও তারা মাঠ ও মাটি কামড়ে ছিল এবং দলকে আঁকড়ে ছিল, রাজনীতি ছাড়েনি। এ দেশে অনেক রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক প্রতিঘাত সইতে না পেরে বা তাড়াতাড়ি ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় নিজেদের রাজনীতি বিসর্জন দেয়। একটা সময়ে জাসদ এই ভুল করেছিল; কিন্তু বিএনপি করেনি। তারা বিভ্রান্ত হয়নি, তারা বাহিনী করেনি। তারা তাদের রাজনীতির শিকড় কামড়ে পড়ে ছিল। এই পরিপক্বতা বিএনপিকে শক্তি জুগিয়েছে ও স্থিতিশীল করেছে।


নেতৃত্ব


বিএনপি খুব সংগঠিত দল। তাদের অভিজ্ঞ নেতার সংখ্যাও কম নয়। দলের একচ্ছত্র নেতা হলেন তারেক রহমান, যিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তারেক জিয়া নামেই সমধিক পরিচিত। তিনি লন্ডনে নির্বাসিত অবস্থান থেকেই দল পরিচালনা করছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম তারেক জিয়ার বৃত্তে থেকেও নিজের জন্য আলাদা পরিচিতি সৃষ্টি করেছেন তাঁর শিষ্টতা ও অসংঘাতপূর্ণ আচরণের জন্য।


বিএনপির সিনিয়র নেতারা যেমন তারেক জিয়ার থেকে একটা দূরত্ব বজায় রাখেন, তরুণ নেতারা তেমনি তাঁকে ঘিরেই রাজনীতি করছেন। এই রসায়ন নির্বাচনী রাজনীতিতে কী ভূমিকা রাখবে বা বাইরের থেকে মনোনয়ন নিয়ে কোনো উত্তেজনা আদৌ বোঝা যাবে কি না, তা দেখার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।



বেগম জিয়া ফ্যাক্টর


বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়িত নন, তবে নিশ্চয় রাজনীতির খোঁজখবর রাখছেন। বিগত ক্ষমতার দিনগুলোতে তারেক জিয়ার সঙ্গে দলের প্রবীণ নেতাদের একটা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ছিল। বেগম জিয়া প্রবীণ নেতাদের তখনকার পরিস্থিতিতে দ্ব্যর্থহীনভাবে সমর্থন দিয়েছিলেন এবং বিএনপিতে তাঁদের অবস্থান সুনিশ্চিত করেন। এখনো তাঁকে বিএনপির ঐক্যের প্রতীক হিসেবে মান্য করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর শরীর যদি তাঁকে সহায়তা করে, তাহলে বিএনপির যেকোনো নাজুক পরিস্থিতিতে তিনি হস্তক্ষেপ না করলেও, তাঁর মতামত জোরালোভাবে তুলে ধরবেন।


তারেক জিয়া এখনো লন্ডনে কেন


যে প্রশ্নটা প্রায়ই শোনা যায়, তারেক জিয়া এখনো লন্ডন থেকেই দল পরিচালনা করছেন কেন? বিএনপির কাউকে জিজ্ঞেস করলে একটা গৎবাঁধা উত্তর শোনা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে মামলাগুলো সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তিনি দেশে আসতে পারছেন না। হয়তো মামলা আছে, কিন্তু এসব মামলায় তাঁকে জেলে নেওয়া হবে বা জামিন দেওয়া হবে না, এটা কেউ বিশ্বাস করবেন না। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে।


তারেক রহমানের এখন পর্যন্ত লন্ডনে থেকে যাওয়ার কারণটা রাজনৈতিক হতে পারে। তিনি লন্ডন থেকে দল চালানোর একটা কার্যকর মডেল খুঁজে পেয়েছেন, অন্য কথায়, ‘কমফোর্ট জোন’ও বলতে পারেন। তিনি ভিডিও মারফত সভা–সমিতি করছেন, তাঁর কাছের লোকদের দ্বারা দেশে দল নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বিরোধ এড়াতে পারছেন। (বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বিরোধ নব্বই দশকে খুব বড় আলোচনার বিষয় ছিল।)


তা ছাড়া মির্জা ফখরুল ইসলাম তারেক জিয়ার নেতৃত্বকে মেনে নিয়েও দেশে বিএনপির জন্য একটা সম্মানজনক নেতৃত্ব সৃষ্টি করেছেন, যেটা বিএনপির জন্য খুবই ইতিবাচক। মির্জা ফখরুল ইসলামের ‘লো প্রোফাইল’ বা নিম্নস্বরের উপস্থিতির জন্য তারেক জিয়া কখনো মির্জা ফখরুলকে ‘হুমকিমূলক’ ভাবেননি। যাঁরা এত সব ঘোরপ্যাঁচ শুনতে চান না, তাঁদের জন্য শুধু বলব, যে জিনিসটা ভালো কাজ করছে, সেটাকে বিএনপি নেতা এখনই ভাঙতে চাচ্ছেন না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও