
ক্ষমতার বদল নয়, বদল ঘটাতে হবে ব্যবস্থার
হঠাৎ বা আকস্মিক একটি সরকারের পতন ঘটতে পারে। একটি আন্দোলন অভ্যুত্থানেও পরিণত হতে পারে। কিন্তু একটি দেশের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের স্বাধীনতা ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত হলেও এর পেছনে রয়েছে ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। ১৯৪৭-এর মধ্য আগস্টে ষড়যন্ত্রের দেশভাগের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ কর্তৃক দয়া-দাক্ষিণ্যের স্বাধীনতা আমাদের প্রকৃতই স্বাধীন করেনি। করেছিল পাকিস্তানি রাষ্ট্রের উপনিবেশ। ব্রিটিশ শাসকদের পরিবর্তে পাকিস্তানি পাঞ্জাবি শাসকদের অধীনে আমরা পাকিস্তান নামক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে অমর্যাদাকর জাতির গ্লানিতে আটকে পড়েছিলাম।
১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের জনক গভর্নর জেনারেল জিন্নাহ ঢাকার রেসকোর্স এবং কার্জন হলে পৃথক দুই স্থানে দৃঢ় চিত্তে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘উর্দু একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তান রাষ্ট্রের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’ কার্জন হলের সমাবর্তনে বক্তৃতায় একই বক্তব্যের পরমুহূর্তে উপস্থিত ছাত্ররা নো-নো ধ্বনি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। বাংলা ভাষার দাবিকে কেন্দ্র করেই বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত সুদীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ-আত্মত্যাগের অজস্র ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পুরো পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। পাকিস্তান সৃষ্টি মূলের সেই ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্ব এই নির্বাচনে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করে বাঙালি জাতি।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ক্ষমতা
- সার্বভৌম ক্ষমতা