নির্বাচিত জার্মান নেতার নতুন আত্মপ্রত্যয়

কালের কণ্ঠ গাজীউল হাসান খান প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৮

জার্মানির সদ্যঃসমাপ্ত সাড়া-জাগানো নির্বাচনে উগ্র ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক সংগঠন অল্টারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) গগনস্পর্শী আস্ফাালন আপাতত বন্ধ হয়েছে। বিরাট ব্যবধানে তারা পরাজিত হয়েছে দেশের প্রাচীন ও রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) কাছে। সিডিইউ এই নির্বাচনে বেভারিয়ায় তাদের সহযোগী সংগঠন ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়নের (সিএসইউ) সঙ্গে নির্বাচনী জোট গঠন করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ইলন মাস্ক ও রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরোক্ষ সমর্থনে নির্বাচনের আগে জার্মানিজুড়ে মাঠ গরম করেছিল নিউ নািস নামে অভিযুক্ত এএফডি।

তখন এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল, এবার হয়তো উগ্র ডানপন্থীদের উত্থান ঠেকানো সম্ভব না-ও হতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রক্ষণশীল গণতান্ত্রিক শক্তির কাছে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাট নেতা ফ্রেডরিশ ম্যারেৎসই এই তোলপাড় করা নির্বাচনে শেষ হাসি হাসলেন।


অর্থনৈতিক দিক থেকে বিপর্যস্ত জার্মানরা আবার আশায় বুক বাঁধল ফ্রেডরিশ ম্যারেেসর সুযোগ্য নেতৃত্বে এক ব্যাপক পরিবর্তনের জন্য।

ম্যারেৎস বলেছিলেন, তাঁর দল নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গেলে তিনি দলনেতা হিসেবে দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। বেকার সমস্যা সমাধানসহ জ্বালানিসংকট মোকাবেলা ও রপ্তানি বাণিজ্যে গতি ফেরাবেন। জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে দেশকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণমুক্ত ও প্রকৃত অর্থে স্বাধীন করবেন। প্রয়োজনে গতিহীন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন ম্যারেৎস।




ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিয়ে প্রকৃত অর্থে জার্মানির কোনো লাভ হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তা ছাড়া অভিবাসন ও বহিরাগত শ্রমজীবী মানুষের ক্ষেত্রে একটি বাস্তবভিত্তিক সমন্বয় সাধন করে বর্তমান অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটাবেন। বর্তমানে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিটি পদক্ষেপ জার্মান নেতা ফ্রেডরিশ ম্যারেৎস অত্যন্ত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে গণমাধ্যমের বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশ। ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য থেকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, নতুন করারোপ থেকে ইউরোপের প্রতি ট্রাম্পের বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ম্যারেৎস গভীরভাবে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনকে একটি ‘ফ্যাসিস্ট রেজিম’ বলে আখ্যায়িত করেন।

তাঁর মতে, আগের বিশ্বব্যবস্থায় যথেষ্ট পরিবর্তন আসতে পারে এবং তার জন্য জার্মানিকে সর্বতোভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তা ছাড়া আঞ্চলিক নিরাপত্তার জটিল বিষয়টিতে অনতিক্রমনীয় দ্বন্দ্ব দেখা দিলে ইউরোপকে তার নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে বলেও এই জার্মান নেতা সতর্ক করেন।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের গ্লানি থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বর্তমান পরিমণ্ডলে দ্রুত বেরিয়ে আসতে চায় জার্মানি। সদ্যঃসমাপ্ত জার্মানির বুন্ডেসটাগের (জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে বিজয়ী জার্মান রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের নেতা ফ্রেডরিশ ম্যারেৎস অতি দ্রুত জার্মানির পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সর্বব্যাপী প্রচেষ্টা (আন্দোলন) চালাবেন বলে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেছেন। বিশ্বের অন্যতম প্রধান পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ম্যারেৎস বলেছেন, দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে তিনি জার্মানি থেকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি সারিয়ে নেবেন। তা ছাড়া জার্মানিতে স্থাপিত যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ারও পক্ষপাতী নবনিযুক্ত জার্মান চ্যান্সেলর ম্যারেৎস। ফ্রেডরিশ ম্যারেৎস বৈদেশিক সামরিক ঘাঁটিমুক্ত একটি পূর্ণ স্বাধীন ও সার্বভৌম জার্মান রাষ্ট্র গঠনে আগ্রহী। তাত্ত্বিক দিক থেকে এটি হবে বৈদেশিক নিয়ন্ত্রণমুক্ত একটি নতুন ইউরোপীয় দেশ। জার্মানির পূর্ণ স্বাধীনতা বাস্তবায়নে ম্যারেৎস দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারির প্রকোপ এবং পর্যায়ক্রমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধারাবাহিকতার কারণে জার্মানিতে চরম জ্বালানি, উৎপাদন ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে এক চরম সংকট দেখা দিয়েছিল। এতে জার্মান অর্থনীতি বিশাল অঙ্কের ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে, যা কাটিয়ে ওঠা মোটেও সম্ভব হয়নি। এতে জার্মানিতে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে, তার ফলে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে যায়। এর ফলে একদিকে যেমন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দেশটির বহির্বাণিজ্য কমেছে, অন্যদিকে বেড়েছে বেকারত্ব ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্যগত ঊর্ধ্বগতি। এমন একটি অবস্থায় গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রক্ষমতায় দ্বিতীয়বারের মতো অধিষ্ঠিত হওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন পন্থায় করারোপ করার হুমকিতে জার্মানিসহ পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এখন বিচলিত হয়ে উঠেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও