
যুগে যুগে আন্দোলন থেকে রাজনৈতিক দল
একটি নতুন রাজনৈতিক দল আজ আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানোর নেতৃত্বদানকারীরা প্রায় সাত মাস পর এই দলটি গঠন করলো।
জাতীয় নাগরিক পার্টির তরুণ নেতৃত্ব দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন করতে, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে এবং সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত হয়েছে।
১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশের বিভক্তি, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৯০-এর দশকে সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন—এসব ঘটনার পর রাজনৈতিক শক্তিগুলো জনগণের আকাঙ্ক্ষা থেকে বিকশিত হয়েছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মূলত ১৯২০ সালে গঠিত অল ইন্ডিয়া কমিউনিস্ট পার্টির উত্তরসূরি সংগঠন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর দলটি কমিউনিস্ট পার্টি অব পাকিস্তান নামে পরিচিত হয় এবং ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ কলকাতায় অল ইন্ডিয়া কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।
আওয়ামী লীগ
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর প্রগতিশীল শক্তিগুলো মুসলিম লীগের সাম্প্রদায়িক ও ডানপন্থী রাজনীতির বিরোধিতা করতে শুরু করে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের নেতৃত্বে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একটি অংশ ১৯৪৯ সালে 'পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ' গঠন করে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এই দলের সভাপতি ও শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
পরে, দলের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে 'মুসলিম' শব্দটি নাম থেকে বাদ দেওয়া হয় এবং এটি পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হিসেবে বিকশিত হয়।
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)
১৯৫৭ সালের জুলাই মাসে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) প্রতিষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগ নেতারা, বিশেষ করে মওলানা ভাসানী ও তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ছিলেন। ভাসানীর নেতৃত্বাধীন বামপন্থী গোষ্ঠী দাবি করেছিল, বাংলাদেশকে কোনো পরাশক্তির সঙ্গে জোটবদ্ধ না হয়ে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে হবে। তার অন্যতম প্রধান দাবি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জন্য সর্বোচ্চ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা।