
বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগের উচ্চাশা
বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগের কিছু রিহার্সাল চলছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ধনকুবের ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পর্ক বেশ আলোচিত। বিশ্বের শীর্ষ ধনী মাস্ক টেসলা, স্পেসএক্স ও এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মালিক। এবারের ভ্যালেন্টাইন ডে’র মধ্যে তাদের ফোনালাপ হয়েছে। ড. ইউনূস ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে দুবাইয়ে অবস্থানকালে তাদের এ ফোনালাপ হয়। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতাবিষয়ক বিভাগ-ডিওজিইর দায়িত্ব দিয়েছেন। এই বিভাগের মাধ্যমে ইলনের কাজ সরকারি ব্যয় সংকোচন করা। ফোনে ড. ইউনূসের সঙ্গে ইলন মাস্কের কী আলাপ হয়েছে? এখনো তা জানানো হয়নি গণমাধ্যমকে। ফোনটা কে কাকে করেছেন, তাও উহ্য। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার শুধু এতটুকু জানিয়েছেন, ‘আলোচনার বিস্তারিত যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে।’ ওই যথাসময়ের অপেক্ষা করার অপেক্ষা নেই। তার আগেই ইলন মাস্ককে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণের খবর। এই ফাঁকে কিন্তু, বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারিবারিক বিজনেস পার্টনার জেনট্রি বিচ।
৩০ জানুয়ারি সকালে তিনি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে ঢাকা নেমেছেন। এসেছিলেন ইসলামাবাদ থেকে। ঢাকা সফরকালে জেনট্রি বিচ বেছে বেছে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগের জন্য নামকরা তিনি। বিচের বাংলাদেশ সফরেও বড় বিনিয়োগের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জেনট্রি বিচও বলে গেছেন, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে নেতৃত্বের পরিবর্তন আসায় নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ এবং সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার জন্য প্রস্তুত। ড. ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বহুদিনের। তা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গেও। ইলন মাস্ক-জেনট্রি বিচদের মাধ্যমে অবশ্যই এর আরও বিস্তার ঘটতে পারে বলে ধারণা অনেকের। ধারণাটি অমূলক নয়। এখন তো সরকারি ভাষ্যেই জানানো হয়েছে, ইলনকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ ও বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর প্রস্তাবের কথা। ১৯ ফেব্রুয়ারি মাস্ককে প্রধান উপদেষ্টার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, তার বাংলাদেশ সফর দেশের তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেবে, যারা এই অগ্রণী প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান সুবিধাভোগী হবেন। চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আসুন, একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে আমরা একসঙ্গে কাজ করি।’ চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের অবকাঠামোর সঙ্গে স্টারলিংকের সংযোগ যুক্ত করা হলে বিশেষ করে দেশের উদ্যমী যুবসমাজ, গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত নারী এবং প্রত্যন্ত ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য তা বৈপ্লবিক পরিবর্তন বয়ে আনবে।