চীনের প্রকল্প নিয়ে নতুন বছরে ভারত কেন উদ্বিগ্ন

প্রথম আলো শুভজিৎ বাগচী প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:১৯

দুই বাংলাতেই যাকে অনেক সময়ই ‘মহাচীন’ বলে সম্বোধন করা হয়, তাকে নিয়ে ভারতের দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। সম্পর্ক এই ভালো হয় তো পরক্ষণেই নতুন উদ্বেগের জন্ম হয়; নতুন বছরে যেমন হচ্ছে। অরুণাচলের মন্ত্রীদের সাম্প্রতিক বিবৃতি ও ভারত সরকারের বক্তব্যে এই উদ্বেগ ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে।


অরুণাচল প্রদেশের উত্তরে রয়েছে আপার সিয়াং জেলা। এই জেলার ঠিক ওপরে স্বশাসিত তিব্বতের দক্ষিণে রয়েছে মেডগ কাউন্টি। এই কাউন্টিতে খরস্রোতা ইয়ারলুং সাংপো নদীর ওপরে চীন বানাতে চলেছে ১৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎচালিত বাঁধ। মনে করা হচ্ছে, এটি শুধু বিশ্বের বৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পই নয়, সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। ডিসেম্বরের ২৫ তারিখে প্রকল্প নির্মাণের ঘোষণা করে চীন জানিয়েছে, ভাটির (লোয়ার রাইপেরিয়ান) দেশের সঙ্গে পানিপ্রবাহ নিয়ে বেইজিং কথা বলবে।


চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিংয়ের কথায়, ‘যোগাযোগের যে বিদ্যমান ব্যবস্থা আছে, তার মাধ্যমে চীন ভাটির দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে এবং নদীর তীরে জনগণের সুবিধার জন্য দুর্যোগ প্রতিরোধ ও ত্রাণসহায়তা বাড়াবে।’ এই ভাটির দেশ বলতে প্রধানত ভারত ও বাংলাদেশকে বোঝায়। নাম না করে এদের আশ্বস্ত করে নিং বলেছেন, প্রকল্প ভাটির দেশকে প্রভাবিত করবে না।



  • ২০২০ সালে ভারত ও চীনের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কিছু সেনার মৃত্যুর পরেও দিল্লি–বেইজিং কথাবার্তা চালিয়ে গেছে।

  • উজানে পানির ওপর চীনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকলেও চীনের সঙ্গে তার প্রতিবেশীদের কোনো আনুষ্ঠানিক পানিবণ্টন চুক্তি নেই। 

  • এলাকাবাসীকে অন্ধকারে রেখে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সমীক্ষা করতে চাইছে সরকার।



ভারতের প্রতিক্রিয়া


২০২০ সালে ভারত ও চীনের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কিছু সেনার মৃত্যুর পরেও দিল্লি–বেইজিং কথাবার্তা চালিয়ে গেছে। এর ফলে ২০২৪ সালে ভারত ও চীনের সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। গত বছরে ভারত দ্বিপক্ষীয়ভাবে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে চীনের সঙ্গে; ১১৮ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র চলে গেছে দ্বিতীয় স্থানে। গত বছরের শেষের দিকে দুই দেশই জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটারের সীমান্ত নিয়ে তাদের মধ্যে চলা দীর্ঘদিনের বিবাদ মেটাতে তারা একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছে। এ ধরনের বিবৃতি তারা অতীতে দেয়নি।


এই অবস্থায় সীমান্তের খুব কাছে এ ধরনের বিশাল অবকাঠামো ভারতকে নতুন করে উদ্বেগে ফেলেছে। ৩ জানুয়ারি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কে ভারত অবগত। এরপরে তিনি বলেন, ‘ভাটির দেশ হিসেবে নদীর জলের ওপরে আমাদের অধিকার রয়েছে। বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত সত্য। তাদের ভূখণ্ডের নদীগুলোতে বৃহৎ প্রকল্পের বিষয়ে চীনের কাছে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের পাশাপাশি কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে আমরা মতামত ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। উজানে ব্রহ্মপুত্রের ভাটির রাজ্যগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।’


কেন পরিস্থিতি ভারতের অনুকূলে নয়


চীন ও ভারতের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ব্যাপারে মোটামুটি একটা ঐকমত্য রয়েছে, যে কারণে সীমান্তে দুই পক্ষের সেনাসদস্য মারা গেলেও কেউই পরস্পরের বিরুদ্ধে একটি গুলিও ছোড়ে না। তবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীন সরাসরি ভারতের সঙ্গে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছে বলে মনে করেন ভারত সরকারের অধীন কিন্তু স্বশাসিত মনোহর পারিক্কার ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের সিনিয়র ফেলো ও পানি-কূটনীতিবিশেষজ্ঞ উত্তম সিনহা।


চীনের প্রকল্প নিয়ে উত্তম সিনহা প্রথম আলোকে বলেন, ভারত মধ্যবর্তী নদীর (মিডল রাইপেরিয়ান) দেশ। তার ওপরের দেশ চীন এবং তার ভাটিতে (লোয়ার রাইপেরিয়ান) রয়েছে বাংলাদেশ। চীনের বিষয়ে যেমন ভারতের উদ্বেগ রয়েছে, তেমনি ভারতের দায়িত্ব রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে পানি ভাগ করার প্রশ্নে। এ ক্ষেত্রে ভারতের সমস্যা হলো, উজানে তার পানির ওপরে চীনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকলেও, চীনের সঙ্গে তার প্রতিবেশীদের কোনো আনুষ্ঠানিক পানিবণ্টন চুক্তি নেই। কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের কয়েকটি পানি চুক্তি রয়েছে। এর ফলে ভারতের সমস্যাটা কমছে না, বাড়ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও