ইসরায়েল সব জায়গায় ব্যর্থ হয়েছে
গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে উঠেছিলেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। প্রায় দুই মাস আগে তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রী ১৫ মাসব্যাপী যুদ্ধের প্রধান স্থপতি ইয়োভ গ্যালান্টের পদত্যাগ এ বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে দিয়েছিল।
গ্যালান্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে গাজায় সেনাবাহিনীর আর কিছু করার নেই। তবু নেতানিয়াহু তাঁর অবস্থানে অনড় থাকেন।
তিনি সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নসের উপস্থিতিতে হামাসের সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে রাফায় সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। নেতানিয়াহুর লক্ষ্য ছিল উত্তর গাজাকে খালি করে সেখানে ইসরায়েলিদের পুনর্বাসন করা।
এই পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল সামরিক রাস্তা আর চৌকি দিয়ে আটকে গাজার কেন্দ্র বরাবর ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে সমুদ্র পর্যন্ত প্রসারিত একটি করিডর তৈরি করা। এই করিডর কার্যত গাজার ভূমির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দখল করত। তৈরি হতো গাজার নতুন উত্তর সীমান্ত।
উত্তর গাজা থেকে বিতাড়িত কোনো ফিলিস্তিনিকে সেখানে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হতো না। বাইডেন প্রশাসনের কেউই নেতানিয়াহুকে এই পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে জোর করেননি।
আর এখন খসড়া চুক্তি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করছে যে ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িতে, এমনকি উত্তর গাজাতেও ফিরে যেতে পারবে। গাজার বাসিন্দাদের বিতাড়িত করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এটি ইসরায়েলের স্থল আক্রমণের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।
ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন সরবরাহ না পেলে কয়েক মাসের মধ্যে তাদের বোমা ফুরিয়ে যেত। ইসরায়েলি জনগণ ভাবছে, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পথে। অথচ ইসরায়েলের বড় কোনো লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।
অক্টোবর ২০২৩-এ দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক আক্রমণের পরে নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামাসকে ‘ধ্বংস’ করার লক্ষ্যে হামলা শুরু করেছিল। তবে স্পষ্টতই তারা এ লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।
হামাস ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এসে প্রতিরোধ করেছে। গাজার উত্তরের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের শুরু থেকে এই অঞ্চলে ৫৫ জন ইসরায়েলি অফিসার এবং সেনা নিহত হয়েছে। যদি আজ কোনো সেনাবাহিনী রক্তাক্ত এবং ক্লান্ত হয়ে থাকে, তবে তা ইসরায়েলের।