দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তিন শূন্যের পথে এগিয়ে নেওয়া উচিত

যুগান্তর ডা. মো. ফয়জুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:৫০

দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তিন শূন্যের পথে এগিয়ে যাওয়া উচিত। প্রথম শূন্য হচ্ছে, এ দেশে কোনো রোগী যাতে নিবন্ধিত চিকিৎসকদের আওতার বাইরে না থাকে। অর্থাৎ সব রোগী যাতে নিবন্ধিত চিকিৎসক থেকে চিকিৎসা পায়। কীভাবে এটি সম্ভব? আমাদের দেশের রাজনীতিক বা নেতৃত্বস্থানীয় লোকদের মধ্যে একটি মুখরোচক কথা আছে, জনগণের দোরগোড়ায় চিকিৎসাব্যবস্থা পৌঁছে দিতে হবে। দেখা যাচ্ছে, একজন রোগীর বাড়ি থেকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২০ কিলোমিটার দূরে। ২০ কিলোমিটার দূর থেকে তাকে কীভাবে চিকিৎসা দেওয়া হবে? যে রোগী, সে হয়তো কৃষক বা দিনমজুর। ২০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে চিকিৎসা করতে গেলে তার একটি দিন পুরো নষ্ট হয়ে যাবে। এ দিনটির খাদ্য নিরাপত্তা তাকে কে দেবে? তাহলে আমাদের নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে।


এখন স্বাস্থ্যব্যবস্থার যে অবয়ব, তা আজ থেকে ৫৫ বছর আগের অবয়ব, যখন জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি। এখন মানুষ বেড়েছে তিনগুণ। মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে রোগেরও পরিবর্তন হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মানুষ হয়েছে স্বাস্থ্যসচেতন। তাই এ অবয়ব দিয়ে আর চলে না। সুতরাং, এ অবয়বের পরিবর্তন প্রয়োজন। এবার আসুন দেখি, কীভাবে পরিবর্তন সম্ভব। প্রতি উপজেলায় ৮-১০টি ইউনিয়ন থাকে। প্রতি ২-৩টি ইউনিয়নের জন্য একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা প্রয়োজন, যেখানে ইনডোরে ১০-১৫টি বেড থাকবে এবং আউটডোর থাকবে, যেখানে ৩-৪ জন চিকিৎসক থাকবেন। এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি হতে হবে ২-৩টি ইউনিয়নের কেন্দ্রের বিন্দুতে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে মসৃণ সরল যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকতে হবে।


দ্বিতীয় শূন্য হচ্ছে, কোনো রোগীকে যেন চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে না হয়। অর্থাৎ সব রোগী যাতে দেশের ভেতরে চিকিৎসা পায়। কীভাবে সম্ভব? আমাদের দেশের অনেক রোগীই চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে চলে যান। দেশের বাইরে যাওয়ার পেছনে কিছু যৌক্তিক কারণ রয়েছে, কিছু অযৌক্তিক কারণও রয়েছে। যৌক্তিক কারণগুলো বলছি।



১. এটি ঠিক, আধুনিক যুগের চিকিৎসাব্যবস্থার মানের সঙ্গে আমরা পেরে উঠতে পারছি না। আমরা যে একেবারে পিছিয়ে আছি তা-ও নয়। চিকিৎসাব্যবস্থায় আমাদের দেশ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। তবে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সমান্তরালভাবে এগিয়ে যেতে পারছে না। আজকের বিশ্বব্যবস্থা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে রোগীরা অনেক সচেতন। রোগীরা চায়, তাদের রোগের চিকিৎসা অত্যাধুনিক হোক। তাই আর্থিকভাবে সচ্ছল রোগীরা অনেক সময় দেশের বাইরে চলে যান। আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থায় অনেক অগ্রগতির প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমাদের নতুন চিকিৎসকদের মানসিকতার অভাব নেই। কিন্তু অভাব হচ্ছে, সরকার এ বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে না এবং বেসরকারি চিকিৎসাব্যবস্থায় যারা জড়িত, তাদের উদ্যোগের অভাব। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, আমাদের দেশে কিডনি প্রতিস্থাপন একেবারেই সীমিত এবং লিভার প্রতিস্থাপন একেবারে হয় না বললেই চলে। রোবোটিক সার্জারি আমাদের দেশে এখনো শুরু হয়নি। ব্রেনের জটিল ও সংবেদনশীল সার্জারি এদেশে হয় না বললেই চলে।


২. অনেক সময় দেখা যায় ডাক্তারের ওপর রোগীদের আস্থার অভাব। একজন চিকিৎসক বা ডাক্তার যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা দিয়েও থাকেন, তার ওপর যদি রোগীদের আস্থার অভাব থাকে, সেক্ষেত্রে রোগীরা আর্থিকভাবে সচ্ছল হলে দেশের বাইরে চলে যান। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের করণীয় কী? চিকিৎসকের করণীয় অনেক কিছু আছে।


ক. চিকিৎসক কর্তৃক রোগীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে হবে। উষ্ণ অভ্যর্থনা মানে এই নয় যে ফুল দিয়ে চেম্বারের বাইরে গিয়ে রোগীকে বরণ করা। বরং রোগী যখন চেম্বারে ঢুকবে, রোগীকে হাসিমুখে সৌজন্যতা দেখিয়ে বরণ করতে হবে।


খ. তারপর রোগীর সঙ্গে আলাপচারিতায় তার নাম, ঠিকানা, তিনি কী করেন জেনে তার সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করতে হবে।


গ. রোগী যখন তার সমস্যাগুলো বলবেন, চিকিৎসক অত্যন্ত মনোযোগসহকারে তা শুনে এবং আনুষঙ্গিক প্রশ্ন করে সমস্যাগুলো বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করবেন। তারপর রোগীর সমস্যাগুলো বর্ণনা করার সময় চিকিৎসক তাকে বাধা দেবেন না। রোগীর সমস্যাগুলো বর্ণনা করার পর্যায়ে রোগী যদি থেমে যান, তাহলে চিকিৎসককে বলতে হবে এরপর আপনার আর কোনো সমস্যা আছে কি? তারপর রোগী যখন বলবেন, আর কোনো সমস্যা নেই, তখনই ডাক্তার সমস্যা শোনা বন্ধ করবেন। এ পর্যায়ে চিকিৎসককে অন্য কারও সঙ্গে কথা বলা যাবে না, টেলিফোন ধরা যাবে না এবং বিরক্ত হওয়া যাবে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও