অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন : বৈষম্যহীন বাংলাদেশ কোন পথে?

ঢাকা পোষ্ট রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৫২

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূরণ হলো। এখনো আমরা জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নিহত-আহতদের তালিকা তৈরি করতে পারিনি। তাদের যথাযথ মর্যাদা, চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের কাজও শেষ হয়নি। আহতদের বিক্ষোভের মধ্য দিয়েই আমরা ১০০ দিনে প্রবেশ করলাম।


অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সাধারণ কোনো সরকার ব্যবস্থা নয়। ইতিপূর্বে আমরা বেশ কয়েকবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেখেছি। যাদের কাজ ছিল নির্দিষ্ট সময়ে সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। কিন্তু বর্তমানে আমরা যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেখছি তা বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ নতুন একটি সরকার ব্যবস্থা।


ব্যাপক ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে এক বিশেষ পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এ সময় আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছিল যে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা যেন আর ফিরে না আসতে পারে তার ব্যবস্থা করা। একই সাথে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার দিকে এগিয়ে যাওয়া।


কাজেই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাথে সাথে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে তা চিহ্নিত করে কাজ শুরু করবে। স্বৈরাচারী ব্যবস্থা যাতে ফিরে না আসতে পারে তার জন্য দীর্ঘদিন ধরে শাসকরা সংবিধানের অপব্যবহার এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে যেভাবে দলীয়করণ করে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো ভোঁতা করে ফেলেছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় নির্মাণে রূপরেখা তৈরি করবে।


অতীতে দেখা গেছে, একটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থা উচ্ছেদ করলেও আবার অন্য একটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থা আমাদের ওপর জেঁকে বসেছে। সাধারণ মানুষ যে উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য নিয়ে সরকার পরিবর্তন করে তা আর অর্জিত হয় না।



বিশেষ করে অর্থনীতির ভিত্তিটা কী তার ওপর সরকারের আচরণ অনেকটাই নির্ভর করে। দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি বিদ্যমান থাকলে তার ওপর দাঁড়িয়ে দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি তৈরি হয়। আর দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতিকে পাহারা দিতে একটি সরকারকে স্বৈরাচারী হতে হয়।


কিছু সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান থাকে যা সরকারকে স্বৈরাচারী আচরণ করা থেকে বিরত রাখতে ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের কাজকে সীমাবদ্ধ রাখে, সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের নিকট তাদের কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে। এসব প্রতিষ্ঠান যদি স্বাধীনভাবে পরিচালিত হতে পারে তাহলে তারা কিছুটা হলেও জনকল্যাণে অবদান রাখতে পারে। কিন্তু আমরা বিগত দিনগুলোয় দেখেছি, এসব প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণের মাধ্যমে অকার্যকর বা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।


অতীতে এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের ক্রীড়ানকের ভূমিকা পালন করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে পুনর্গঠন করা যায়, এজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ চিন্তকদের সাথে আলোচনা করে সেই অনুযায়ী পথরেখা বা নির্দেশনা তৈরি করা।


২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম স্লোগান ছিল—বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কাজেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে সমাজের সবস্তরে বিদ্যমান বৈষম্য যথাসম্ভব দূর করা। এ লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু সংস্কারের রূপরেখা প্রণয়ন করবে এবং সুপারিশ প্রদান করবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সুপারিশগুলো গ্রহণ করা গেলে, আগামী সরকারকে বা সরকারের বাইরে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীকে ওই সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করাতে প্রচেষ্টা নেওয়া যাবে।


এ বিষয়ে ঐকমত্য থাকলে সাধারণভাবে বলা যাবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সেইসব সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে। আর এ কাজ না করলে জনগণই তাদের বিরুদ্ধে ভূমিকা নেবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও