You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ব্যুৎপত্তির বাস মস্তিষ্কে, উৎপত্তির স্থান মনে

গাছের আপেল ঝরে গেলে আদিকাল থেকে তা নিচেই পড়েছে; লক্ষ কোটি মানুষ তা প্রত্যক্ষ করেছে এবং ভক্ষণ করেছে। কারো মস্তিষ্কে কোন প্রশ্নের উদ্রেক হয়নি। কিন্তু একজন ভেবেছিলেন আপেল নিচের দিকে না এসে উপরের দিকে যাচ্ছে না কেন? আইজ্যাক নিউটন সেই ভাবনা থেকে মধ্যাকর্ষণ শক্তির খোঁজ পেয়েছিলেন; জ্ঞান-বিজ্ঞানের জগৎকে সমূলে কাঁপিয়ে দেওয়া গতিসূত্র আবিষ্কার করেছিলেন। জলভরা চৌবাচ্চায় স্নান করতে নামলে জল সবসময়ই উপচে পড়েছে। কেন উপচে পড়ছে, এ নিয়ে কারো কোন মাথাব্যথা ছিল না। একজনের ছিল। আর্কিমিডিস যখন উত্তরটা খুঁজে পেলেন, তখন ‘ইউরেকা’ ‘ইউরেকা’ মানে ‘পেয়েছি’ ‘পেয়েছি’ বলে চিৎকার করতে করতে নগ্নদেহে দৌড়ে রাজপথে চলে এসেছিলেন। প্রাপ্ত উত্তর দিয়ে তিনি শুধু স্বর্ণের খাঁটিত্ব নিরূপণ নয়, বিজ্ঞানের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্লবতার সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন, যার উপর ভিত্তি করে ২ লক্ষাধিক টন ওজনের জাহাজ পানিতে ভাসছে, অথচ একটা সুঁই পানিতে ডুবে যাচ্ছে।

আসন্ন ‘শান্তি ও উন্নয়নের জন্য বিশ্ব বিজ্ঞান দিবস’-এর প্রেক্ষাপটে দুটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের পটভূমির অবতারণা করা হলো। ইউনেস্কোর উদ্যোগে প্রতি বছর ১০ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘বিজ্ঞানকে গুরুত্ব দিতে হবে, মনের নির্দেশনায় এবং বলিষ্ঠ ভবিষ্যৎ নির্মাণে’। তাছাড়াও আমরা এখন জাতিসংঘ ঘোষিত ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান দশক’-এর প্রথম বছরে অবস্থান করছি।

বিজ্ঞান হচ্ছে জ্ঞানের যে কোনও ক্ষেত্র যা ভৌত জগৎ এবং এর ঘটনাবলির সঙ্গে সম্পর্কিত এবং যা নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ এবং পদ্ধতিগত পরীক্ষা-নিরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত। সাধারণ সত্য বা মৌলিক সূত্রের ক্রিয়াপদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে এমন জ্ঞানান্বেষণই বিজ্ঞান। নাশা (এনএএসএ) বলছে বিজ্ঞান হল বিশ্ব এবং এটি কীভাবে আচরণ করে সে সম্পর্কে চিন্তাশীল কর্মের কৌতূহল। অধ্যয়নের বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানকে বিভিন্ন শাখায় ভাগ করা যায়। ভৌত বিজ্ঞান অজৈব জগৎ অধ্যয়ন করে এবং জ্যোতির্বিদ্যা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং পৃথিবী বিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলোকে সম্পৃক্ত করে। জীববিজ্ঞান, চিকিৎসা এবং ওষুধের মতো জৈবিক বিজ্ঞানগুলো জীবনের জৈব জগৎ এবং এর প্রক্রিয়াগুলো অধ্যয়ন করে। নৃবিজ্ঞান এবং অর্থনীতির মতো সামাজিক বিজ্ঞানগুলো মানুষের আচরণের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিকগুলো অধ্যয়ন করে। তবে যে ধরনেরই হোক, বিজ্ঞানের আওতায় পড়তে হলে ওই জ্ঞানটিকে সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে। আর একই শর্তের অধীনে যে গবেষকই পরীক্ষণটি করুন না কেন ফলাফল একই হতে হবে। অর্থাৎ ব্যক্তি চেতনা অনুযায়ী বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষণের ফলাফল কখনও পরিবর্তিত হতে পারে না।

নিউটন বলেছিলেন, ‘প্লেটো আমার বন্ধু, অ্যারিস্টটল আমার বন্ধু– কিন্তু আমার সবচেয়ে বড় বন্ধু সত্য।...আমি কেবল সমুদ্রসৈকতে ক্রীড়ারত একটি ছেলের মতো এবং কিছূ মসৃণ নুড়ি বা সাধারণের চেয়ে সুন্দর কিছু ঝিনুক খুঁজে পেয়েছি; সত্যের মহাসমুদ্র আমার কাছে আজো অনাবিষ্কৃত।’ বিজ্ঞানের ধর্ম তাহলে দাঁড়ালো সত্য প্রতিষ্ঠা করার কর্ম এবং তা একটি অনিঃশেষ প্রক্রিয়া। প্রচলিত বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা, ভাবনা-নির্ভাবনা, সংস্কার ভেদ করে প্রমাণাদির মাধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠা করা। গ্যালিলিও যেমন ধর্মযাজকদের মতবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘সূর্য ঘুরছে না, সে স্থির। পৃথিবী ঘুরছে, সূর্যের চারিদিকে’। এজন্য তাকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছিল। কারাগার থেকে বেরিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘যাহোক, পৃথিবী ঘুরছে’। কারো কারো ধারণা চারপাশে দৃশ্যমান যত কলকব্জা, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, ইন্টারনেট, প্রযুক্তি– এইই বুঝি বিজ্ঞান। কিন্তু না, এটি তার চেয়ে অনেক গভীর কিছু। রসায়নবিদ হ্যারি ক্রোটোর মতে ‘বিজ্ঞান, বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আমার কাছে একমাত্র দার্শনিক গঠন, যা মানবজাতি নির্ভরযোগ্যভাবে যা সত্য তা নির্ধারণ করার জন্য তৈরি করেছে।’ স্মরণ করা যেতে পারে যে, পদার্থবিদ্যা ১৮ শতকের শেষ পর্যন্ত ন্যাচারাল ফিলোসফি অর্থাৎ প্রাকৃতিক দর্শন হিসাবে পরিচিত ছিল। ১৯ শতকে পদার্থবিদ্যা দর্শন এবং অন্যান্য বিজ্ঞান থেকে আলাদা একটি শৃঙ্খলা হিসাবে নামায়িত হয়েছিল। বিজ্ঞান যদি সত্য প্রতিষ্ঠার দর্শন হয়, তাহলে আশেপাশে চোখ বুলালে সেই সত্য বাস্তবে কতটুকু এবং কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার একটা চিত্র দেখে নেয়া যেতে পারে। যুগে যুগে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অসাধারণ উদ্ভাবন উপহার দিয়েছে, যা মানবজাতির জন্য উপকারী হয়েছে। মানুষের আয়ুষ্কাল উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, অনেক দুরারোগ্য রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব হচ্ছে, কয়েকটি প্রাণঘাতী রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটাচ্ছে। ইঞ্জিন, জ্বালানিশক্তির বহুমুখী ব্যবহার, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন মানুষকে কঠিন কায়িক শ্রম থেকে রেহাই দিয়েছে; জীবনযাপনকে আরামদায়ক করেছে। পাখির মত আকাশে ওড়ার, গ্রহের মত মহাকাশে ভাসার, মাছের মত অতল জলে থাকার, চিতাবাঘের চেয়ে অনেক দ্রুত ছোটার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন নতুন যোগাযোগ পদ্ধতি ও তথ্য ব্যবস্থাপনা আর্থিক, বাণিজ্যিক ও সামাজিক খাতে অভূতপূর্ব কর্মপরিবেশ ও গতিশীলতা সৃষ্টি করেছে।

তাহলে বিজ্ঞানের ভুরি ভুরি অবিসংবাদিত সাফল্যের সঙ্গে এ বছরের বিজ্ঞান দিবসের প্রতিপাদ্যের সংযোগ কোথায়? এতে বলা হচ্ছে বিজ্ঞানকে যথাযথ মূল্য দিতে হবে, বিজ্ঞান যেন মনের দ্বারা পরিচালিত হয় এবং মানবজাতির জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণ করে দেয়। উদাহরণ দিয়ে তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা যেতে পারে।

মানবজাতি এখন পর্যন্ত ২টি বিশ্বযুদ্ধে জানমালের ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ সহ্য করেছে। ৩য় বিশ্বযুদ্ধ এখনও সংঘটিত না হলেও পৃথিবী জুড়ে দেশে দেশে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বে জাতিসংঘ স্বীকৃত দেশের সংখ্যা ১৯৫টি। তার মধ্যে ৪২টি দেশ বর্তমানে যুদ্ধ বা যুদ্ধের মতো সংঘর্ষে জড়িত– এ হিসাব দিচ্ছে ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ। বিশ্ব শান্তি সূচক (জিপিআই) মোতাবেক বর্তমানে বিশ্বে ৫৬টি সংঘর্ষ চলমান রয়েছে, ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর যা সবচেয়ে বেশি; ৯২টি দেশ তাদের সীমান্তে সংঘর্ষে লিপ্ত; ১১০ মিলিয়ন মানুষ হয় শরণার্থী বা সহিংস সংঘাতের কারণে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত। জেনিভা অ্যাকাডেমি অব ইন্টারন্যাশনাল ল বলছে তারা ইন্টারন্যাশনাল হিউমেনিটারিয়ান ল অনুসরণপূর্বক এখন ১১০ টিরও বেশি সশস্ত্র সংঘাত পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের মধ্যে কিছু সম্প্রতি শুরু হয়েছে, অন্যগুলো ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে। মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল, সেখানে ৪৫টিরও বেশি সশস্ত্র সংঘর্ষ চলমান। এশিয়ায় ২১টি সশস্ত্র সংঘর্ষ চলছে। আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা অনুযায়ী বিশ্বে ১৮০০ সাল থেকে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ৩৭ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অসলো (পিআরআইও)-র তথ্য মতে ২০২৩ সালে যুদ্ধে ১২২,০০০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যুদ্ধের কারণে মারা যাওয়া বেসামরিক নাগরিক, সংঘর্ষ উপজাত ক্ষুধা ও রোগের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা এবং যুদ্ধ হিসাবে বিবেচিত ছোট সংঘাতে মৃত্যুকে বিবেচনা করলে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি হবে। যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২২ সালে পরপর অষ্টম বছরের মত বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় বেড়েছে এবং তা পৌঁছেছে আনুমানিক ২২৪০ বিলিয়ন ইউএস ডলারে। বিশ্ব গড়ে তার বাজেটের ৬.২ শতাংশ ব্যয় করেছে সামরিক খাতে; জনপ্রতি খরচ করছে ২৮২ ডলার। সহিংসতা নিরসনে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বরাদ্দ ২০২৩ সালে বেড়ে ১৯.১ ট্রিলিয়ন ইউএসডি হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী জিডিপির ১৩.৫%।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন