বিবিধ বাহাসে ফিকে হয়ে আসে গ্রাফিতি

প্রথম আলো মানজুর-আল-মতিন প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৫৩

দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতিগুলো ফিকে হয়ে আসছে। মলিন হয়ে আসছে হৃদয় নিংড়ে বেরিয়ে আসা রঙের আঁচড়গুলো। জুলাই অভ্যুত্থানের তিন মাস পেরিয়ে গেল। হাজারো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত ৩৬ জুলাইয়ের মুক্তির পর যে স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, তাতে কোনো সীমারেখা টানিনি কেউ। সব মত আর পথ সেদিন এসে মিশেছিল ঢাকার রাজপথে। এমন জাতীয় ঐক্য শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে কেন, বোধ করি, পৃথিবীতেই বিরল।


কিন্তু যেখানে আর দশটা আন্দোলন কিংবা আমাদেরই ইতিহাসের সঙ্গে ৩৬ জুলাইয়ের পরের দিনগুলো মিলে যায়, তা হচ্ছে আন্দোলনের পরের দিনগুলোতে খানিকটা আশা ভঙ্গ, কিছুটা সংশয় আর গণ-অভ্যুত্থানের সম্মিলিত শক্তির বাঁধন আলগা হয়ে আসার প্রবণতা।


বাংলাদেশে যখন লাখো জনতা পথে নেমে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিয়েছে, তখন অনেকে এই অভ্যুত্থানের তুলনা করেছেন আরব বসন্তের সঙ্গে। আশঙ্কা করেছেন আরব বসন্তের মতোই আমাদের অর্জন হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। সে তুলনা অমূলক নয়, কিন্তু আরব বসন্ত থেকে শিক্ষা নিলে মিসর কিংবা সুদানের মতো দেশের পরিণতি এড়িয়ে অন্তত শ্রীলঙ্কার পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।


মিসরে তিন দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা হোসনি মোবারক জনতার প্রতিবাদের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন ২০১১ সালে। তাহরির স্কয়ারে সম্মিলিত জনতা তখন স্বপ্ন দেখেছিলেন নতুন এক মিসরের, যেখানে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে, মানুষ পাবে অধিকার। বছর না ঘুরতেই সে দেশে নির্বাচন হয়, পরের বছর ক্ষমতায় আসেন মুসলিম ব্রাদারহুড–সমর্থিত মোহাম্মদ মুরসি। কিন্তু নতুন দেশ গঠনে জাতীয় ঐক্য থেকে যায় সুদূরপরাহত। অভ্যুত্থানে সম্মিলিত শক্তিগুলোর মধ্যে বিবাদগুলো প্রকাশ্যে আসতে থাকে, ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত।



অভিযোগ আছে, এ সংঘাত ছড়িয়ে দিতে পর্দার আড়ালে ভূমিকা রাখে দেশটির সামরিক বাহিনী। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে রাজপথে বড় রকমের সংঘাতে জড়ায় মুরসির দল আর তাদের প্রতিপক্ষরা। এরপর জাতীয় সংলাপের ডাক সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হলেও তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।


অভ্যুত্থানের আড়াই বছরের মাথায় ২০১৩ সালের জুলাইয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ফিল্ড মার্শাল আল-সিসি ৯৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। শুরু হয় মিসরের স্বৈরতন্ত্রের নতুন অধ্যায়।


২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আফ্রিকার আরেক দেশ সুদানে গণ-অভ্যুত্থানের সূত্রপাত হয়। সে দেশেও রাষ্ট্রপতি ওমর আল বশির ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় ছিলেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে এসে ঠেকেছিল, দ্রব্যমূল্য হয়েছিল তিন গুণ।


২০১৯ সালের এপ্রিলে জনতার বিক্ষোভের মুখে আল বশিরকে গ্রেপ্তার করে দেশটির সেনাবাহিনী, জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। সে বছরের জুলাইয়ে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনরত শক্তিগুলোর চুক্তি সই হয়। লক্ষ্য ছিল সংস্কার ও গণতন্ত্রায়ণ। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন আবদুল্লাহ হামদক। তাঁর ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি, কাজ করেছিলেন জাতিসংঘের সঙ্গেও। শুরু হয় সংস্কারের নানা উদ্যোগ।


পুরোনো ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থাকে ভেঙে নতুন দেশ গড়ার উদ্যোগ যেমন চলছিল, তেমনি অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টাও থেমে ছিল না। বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রশ্নে বিভক্ত হয়ে পড়ে সুদানের অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শক্তিগুলো। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কথা ছিল সামরিক-বেসামরিক শক্তির সমন্বয়ে গঠিত যৌথ একটি কাউন্সিলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার। কিন্তু তার আগেই ২০২১ সালের অক্টোবরে সামরিক ক্যুতে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেওয়া হয় হামদককে। আবারও শুরু হয় বিক্ষোভ, অস্থিরতা। এখন সুদানে সামরিক বাহিনী আর মিলিশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেধে গেছে, প্রাণ হারাচ্ছে হাজারো নিরীহ মানুষ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও