পার্বত্যের অশান্ত পরিস্থিতি কীসের আলামত?
পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের জন্য সব সময়েই একটি স্পর্শকাতর অঞ্চল হিসাবেই বিবেচিত হয়ে আসছে। স্বাধীনতার পর প্রায় দুই দশক ধরে পৃথক ভূমির দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে সশস্ত্র তৎপরতা চলেছিল, তা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সফল সামরিক অভিযান ও সরকারের রাজনৈতিক পদক্ষেপের ফলে সে সময় দেশ রক্ষা পায়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পাহাড়ের সশস্ত্র বিপথগামীরা অস্ত্রসমর্পণ করে সামাজিক জীবনে ফিরে আসে। সে সময় একটি শান্তিচুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। সে চুক্তির বেশকিছু বিষয় বাস্তবায়ন হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
এর মধ্যে ভূমি সমস্যা অন্যতম। ভূমি জরিপের মাধ্যমে যথাযথ যাচাই করে জায়গা-জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করা এবং সেখানকার জনগণের ভূমি মালিকানা চূড়ান্ত করে তাদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত করার কাজটি আজও অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। এ চুক্তির অন্যান্য ধারা নিয়েও বিতর্ক আছে। কিছু কিছু ধারা বৈষম্যমূলকও। যেমন পার্বত্য চট্টগ্রামের যে কেউ সমতল ভূমিতে জমি ক্রয় করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারলেও সমতল ভূমির কেউ পার্বত্য চট্টগ্রামে জমি ক্রয় করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন না। চুক্তির এ ধারাটি বাংলাদেশের সংবিধানবিরোধী। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এমন বৈষম্যমূলক ধারা আছে। এ ধরনের কিছু বিতর্কিত বিষয় থাকায় শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।