একটি মৃত্যু ও পাহাড়ে অশান্তি
এমনিতেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বস্তিকর নয়। হামলা-হত্যা-গণপিটুনির ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। আইনবহির্ভূত হত্যকাণ্ডের ঘটনা বাড়ছে। এই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই হঠাৎ করে পার্বত্য জেলাগুলো অশান্ত হয়ে পড়েছে। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল খাগড়াছড়ি জেলায়, এরপর দীঘিনালা হয়ে রাঙামাটি পর্যন্ত আতঙ্ক-সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত দুই জেলায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে সরকারিভাবে চারজনের মৃত্যুর খবর বেরিয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। তবে অনেকের আশঙ্কা, হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি। ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক সরকারি স্থাপনা, ঘরবাড়ি, ও দোকানপাট। পুরো পাহাড়ি অঞ্চল এখনো থমথমে। কখন কী ঘটে যায়, তা নিয়ে জনমনে রয়েছে আতঙ্ক, ভয়।
পাহাড়ে অশান্তি আপাতত থামলেও, যে ক্ষোভ, বিতৃষ্ণা ও ক্রোধ সৃষ্টি হয়েছে, তা যদি ভবিষ্যতে আরও গভীর হয়, তাকে প্রশাসন সামলাবে কী করে? বিভেদ এবং পার্থক্য আরও গভীর হলে শুধু প্রশাসনের ক্ষতি নয়, দেশের ক্ষতি। হয়তো এক অর্থে অপূরণীয়।
ইতিমধ্যেই সরকারিভাবে চারজনের প্রাণহানির কথা বলা হয়েছে। হিংসা-প্রতিহিংসার অন্তহীন আবর্তে তা যে আরও বাড়বে না, কে বলতে পারে? বর্তমান সংঘাত নিরসনে অবিলম্বে আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে প্রশাসনকেই, কারণ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানুষের নিরাপত্তাবিধানের দায়িত্ব তাদের।
পার্বত্যাঞ্চলে এ পরিণতি কি অমোঘ ছিল? এই সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছে নাকি একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে ঘিরে। ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়ার রাস্তায় মামুন নামের একজনের লাশ পাওয়া যায়। পুলিশের তথ্যমতে, মামুন বাইক চুরি করে দ্রুতগতিতে পালাতে গিয়ে বিদ্যুতের পোলের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আহত হলে তাঁকে ধাওয়া করা লোকজন পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মামুনের মৃত্যু হয়। খাগড়াছড়ি থানা-পুলিশ জানিয়েছে, মামুনের বিরুদ্ধে ১৪টি চুরির মামলা এবং দুটি মাদক মামলা ছিল।