কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

হাজার টাকার বাগান খাইল...

www.ajkerpatrika.com মহিউদ্দিন খান মোহন প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:২৮

‘হাজার টাকার বাগান খাইল পাঁচ টাকার ছাগলে’—আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদবাক্য। ছাগল একটি গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু। এমনিতে এটি একটি নিরীহ প্রাণী, ‘সাত চড়ে রা নেই’ ধরনের। তবে বুদ্ধিশুদ্ধি কম থাকায় এটা মাঝেমধ্যে মনিবের ক্ষতি করে ফেলে। অবলা প্রাণী, তার ওপর মাথায় মগজ কম।


তাই কখন যে মনিব বা অন্য কারও বাগানে ঢুকে গাছপালা উদরস্থ করে, তার ঠিক-ঠিকানা নেই। বোধকরি এ থেকেই উপরিউক্ত প্রবাদটির উৎপত্তি। আবার ‘ছাগল’ একটি প্রসিদ্ধ গালিও বটে। কেউ বোকার মতো কাজ করলে বা কথা বললে মানুষ তাকে ‘ছাগলের মতো কাজ করলি’ বা ‘ছাগলের মতো কথা বলিস না’ বলে তিরস্কার করে। যদিও ছাগল কথা বলে না। ছাগল কখনো আলোচনার বিষয় ছিল না।


অবশ্য কিছুদিন আগে ছাগল সংবাদ শিরোনাম হয়েছিল ‘দেশে ছাগলের সংখ্যা বেশি’—এই খবরে। গ্রামাঞ্চলের গেরস্তবাড়িতে দু-চারটা ছাগল পোষা হয়। আবার বাণিজ্যিক ভিত্তিতেও ছাগল পালন করা হয়। কুষ্টিয়ার ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ প্রজাতির ছাগল অত্যন্ত প্রসিদ্ধ।


২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ পালন প্রকল্পের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। এর উদ্যোক্তা ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী। তবে সে প্রকল্পটি সফলতা পায়নি।


আমার আজকের রচনা কিন্তু ছাগল প্রকল্প নিয়ে নয়; বরং একটি দামি ছাগল কীভাবে দেশের একজন শীর্ষ দুর্নীতিবাজের মুখোশ উন্মোচন করে দিল, তা নিয়েই কথা বলতে চাইছি। সে ‘মহান ছাগলটির’ কথা এখন আর কারও জানতে বাকি নেই। সদ্য উদ্‌যাপিত ঈদুল আজহা উপলক্ষে এক কিশোর ১২ লাখ টাকা দামের একটি ছাগল ক্রয় করেছিল। ছাগলের গলা জড়িয়ে ধরে ফটো তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে বাহবা কুড়াতে গিয়ে সে কুড়াল মারল তার পিতা ও পরিবারের পায়ে। সংগত কারণেই ১২ লাখের ছাগল চলে এল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সবাই জানতে ইচ্ছুক, কে এই ধনাঢ্য ক্রেতা যে ১২ লাখ টাকার ছাগল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছেন?


অবশেষে বেরিয়ে এল থলের বিড়াল। বলা যায় কেঁচো খুঁড়তে সাপ। জানা গেল, সেই ছাগল ক্রেতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার কিশোর পুত্র! পুত্রের নাম মুশফিকুর রহমান ইফাত, আর তার পিতা মতিউর রহমান এনবিআরের ‘কাস্টমস এক্সাইজ ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের’ প্রেসিডেন্ট। সংবাদমাধ্যমে এ খবর বেরোনোর পর সবাই বিস্ময়ে হতভম্ব। প্রশ্ন উঠল, একজন সরকারি কর্মকর্তার কিশোর পুত্র ১২ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার ক্ষমতা রাখলে তার পিতৃদেব কত টাকার মালিক?


জবাব পেতে বেশি দেরি হয়নি। পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে মতিউর রহমানের অঢেল সম্পদের যে বিবরণ বেরিয়েছে, তাতে সবাই একবাক্যে বলেছেন, এ যেন আরেক বেনজীর! খবরে বলা হয়েছে, চাকরিজীবনে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন মতিউর। মাত্র একটি ব্যাংকেই রয়েছে তাঁর ১১৭ কোটি টাকা। বসুন্ধরা, গুলশানের মতো অভিজাত আবাসিক এলাকায় রয়েছে বিলাসবহুল একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি। এ ছাড়া গাজীপুর, সাভার এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে রিসোর্টসহ বিপুল পরিমাণ জমি।


নরসিংদীতে মতিউরের যে রিসোর্টটি রয়েছে, তা তৈরি হয়েছে ৪০ বিঘা জমির ওপর। অর্থ-সম্পদের মতো মতিউর স্ত্রীর দিক দিয়েও সম্পদশালী। তাঁর দুই স্ত্রী। তাঁদের একজন আবার নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের নেত্রী এবং ওই জেলার রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। মতিউর তাঁর মেয়েকে ১০ কোটি টাকা দিয়ে কানাডায় বাড়ি করে দিয়েছেন। ছোট বউকে এক দিনেই নাকি দান করেছেন ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ। বিস্ময়করই বটে! একমাত্র আলাদিনের চেরাগ ছাড়া অদৃশ্য উৎস থেকে কেউ এমন বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে পারে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও