সম্পদের পাহাড়ের চূড়ায় বসে আছেন অনেকে
সম্পদের লোভ মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। মানুষের এ সহজাত প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রেই কঠোর আইনি ব্যবস্থা থাকে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। মানুষের এ সহজাত প্রবৃত্তিকে বিবেচনা করেই সংবিধানে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয় যে, রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টি করবে, যেন কোনো ব্যক্তি অনুপার্জিত আয় ভোগ করতে সমর্থ না হয়। রাষ্ট্রীয় এ নীতির প্রতিফলনেই দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক ও দুর্নীতিবিরোধী আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরাও যেন অনুপার্জিত অর্থ ভোগ না করতে পারে, সেজন্য সরকারি কর্মচারী আচরণবিধিতে চাকরিতে প্রবেশের সময় এবং পরবর্তী প্রতি বছর সরকারি কর্মচারী ও পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। এছাড়া উক্ত বিধিতে সরকারি কর্মচারী কর্তৃক সম্পদ অর্জন ও হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়; কিন্তু প্রতি বছর সম্পদের হিসাব দাখিল বাধ্যতামূলক হলেও সরকারি কর্মচারীদের অনীহা ও সরকারের নজরদারির অভাবে তা কার্যকর করা যায়নি।
উপরন্তু প্রতি বছর সম্পদের হিসাব দাখিলের বাধ্যতামূলক বিধান ২০০২ সালে শিথিল করে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সম্পদের হিসাব দাখিলের বিধান করা হয়। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে তা-ও কার্যকর করা যায়নি। কেবল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সেই সদিচ্ছা ও কঠোর নির্দেশনার কারণে কর্মচারীরা সম্পদের হিসাব দাখিল করতে বাধ্য হয়। কিন্তু কর্মচারীদের দাখিলকৃত উক্ত সম্পদের হিসাব বিবরণীও যাচাই-বাছাই করে অনুপার্জিত অর্থের সন্ধান করা হয়নি।