কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

সপ্তম আসমান থেকে মাটিতে নেমে আসুন

যুগান্তর একেএম শাহনাওয়াজ প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৭

বাংলাদেশের সরকারি ও সরকারবিরোধী রাজনীতিকদের একটি সুবিধা আছে। তাদের অনেক বেফাঁস কথাবার্তা ও কাজকর্ম নিয়ে বেশিদিন সমালোচনা করার সুযোগ থাকে না। কারণ ঘটন-অঘটন এদেশে এত বেশি যে, একটি সংকটের রেশ না কাটতেই আরেকটি সংকট সামনে চলে আসে। তাই আগের ইস্যুটি মাটিচাপা পড়ে যায়। তবে কখনো কখনো ছাইচাপাও পড়ে। ফলে যে কোনো সময় আগুন উসকে উঠতে পারে।


বুয়েট সংকটটিও তেমন একটি। রমজানের মধ্যেই বেশ কদিন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, প্রশাসনের বক্তব্য, ছাত্রলীগের তৎপরতা, টিভি টকশোতে জ্ঞানী বিজ্ঞজনের কথা আর রাজনীতির ক্ষমতাবানদের বক্তব্য শুনে শুনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। বুয়েটের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছিল। দেশের সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া-বিশেষ করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক শিক্ষক-রাজনীতিমুক্ত শিক্ষক, কর্মচারী কারও বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে আসে না বলে এ ডামাডোলে তাদের মতামত জানা হলো না। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য প্রগতিশীল নেতা ফর্মুলায় আটকে থাকা গৎবাঁধা কথাই শোনালেন। ছাত্র রাজনীতি ক্যাম্পাসে না থাকলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ মহাসংকটে পড়বে। ধর্মান্ধ-জঙ্গি দলগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সংবিধানে সংগঠন করার অধিকার স্বীকৃত। তাই মহামান্য আদালতও বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বহাল রাখার পক্ষে ছাত্রলীগ নেতার রিট নিষ্পত্তি করেছেন। ফল হিসাবে দীর্ঘ বিরতির পর সদম্ভে বুয়েট ক্যাম্পাস ছাত্রলীগ নেতাদের পদভারে মুখরিত।


সীমিত প্রয়াসে সাধারণের জয় সহজে হয় না। বুয়েটেও সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা আপাতত প্রতিহত হলো। আপাতত এজন্য বলছি ছাত্রলীগ নেতারা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেভাবে অভিভাবকসুলভ পরামর্শ দিচ্ছিলেন, তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটো দিকই আছে। ইতিবাচক হলে কোনো কথা নেই। নেতিবাচক হলে প্রবল শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। কারণ সব ক্যাম্পাসেই সবসময় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতারা শিক্ষার্থীদের সতীর্থ না হয়ে প্রভু হতে পছন্দ করে। বুয়েট ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের আওতায় না থাকলেও পৃথিবীজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসেপ্টই হচ্ছে মুক্ত বিবেকের চর্চা কেন্দ্র। তাই এক ধরনের স্বায়ত্তশাসন চলমান থাকেই। ফলে এখান থেকে একটি স্বাধীন শক্তির উৎসারণ ঠেকানো মুশকিল।


সংবিধানে প্রকারান্তরে ছাত্র রাজনীতি করার অধিকার সংরক্ষিত আছে। এর পেছনে মহৎ উদ্দেশ্য ছিল। প্রায়োগিক ক্ষেত্রে এ অধিকারের অপব্যবহার হলে তা নিয়ে ব্যাখ্যার অবকাশ কি থাকবে না? এসব কথা কিন্তু ক্ষমতাবান কোনো পক্ষ থেকেই বলতে শুনলাম না। বিজ্ঞ নেতারা যেভাবে বক্তব্য রাখছিলেন, তাতে মনে হচ্ছে তাদের কাছে ক্যাম্পাসে শিক্ষা-গবেষণার পরিবেশ ভাবনা অপ্রধান বিষয়। প্রধান বিষয় হচ্ছে ছাত্র রাজনীতিকে তরতাজা করে তোলা। কিন্তু যে রাজনীতির বণিকরা ক্যাম্পাসে রাজনীতির পক্ষে সাফাই গাইছেন, সংবিধানের কথা বলছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, কোন ক্যাম্পাসে প্রকৃত অর্থে ছাত্র রাজনীতি রয়েছে? বিএনপি আমলে ছাত্রদলের দাপটে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসছাড়া হতো। অন্য দলগুলো থাকত কোণঠাসা। আওয়ামী লীগ আমলে ছাত্রদল ক্যাম্পাসছাড়া। অন্য দলগুলো এখনো কোণঠাসা। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে গেলে দেখা যাবে অনেক কক্ষ চিহ্নিত ‘পলিটিক্যাল রুম’ হিসাবে। সেখানে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা দাপটের সঙ্গে থাকেন। বাকি কক্ষ ‘সাধারণ’ শিক্ষার্থীদের কক্ষ। অর্থাৎ প্রচলিত ছাত্র রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাধারণ ও অসাধারণে ভাগ করে ফেলেছে। এ বাস্তবতায় বিএনপি আমলে ছাত্রদল আর আওয়ামী লীগ আমলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছাত্র কল্যাণের দায়িত্ব নিয়ে কখনো সাধারণ ছাত্রদের পাশে বন্ধু হয়ে দাঁড়ায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তাদের ভূমিকা গৌণ। বরং শিক্ষার্থীদের ন্যায়ানুগ অধিকার রক্ষার দাবি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, তখন প্রগতিশীল রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীরা এতে অংশ নিলেও যতই যৌক্তিক আন্দোলন হোক, আন্দোলনের বিপরীতে অবস্থান নেয় সরকারদলীয় ছাত্র নেতাকর্মীরা। তারা সরকারসমর্থিত উপাচার্যকে রক্ষা করতে আসুরিক দাপট নিয়ে দাঁড়ায়। ছাত্রের সাধারণ একাডেমিক সংশ্লিষ্টতা এদের মধ্যে তেমন দেখা যায় না। বিগত দুই দশকের ক্যাম্পাসগুলোর ছাত্র রাজনীতি শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কল্যাণে কী ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে, তা নিয়ে কেউ গবেষণা করলে বড় ভয়ংকর ফল বেরিয়ে আসতে পারে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও