প্রতিবিপ্লবী রাজনীতি ও গণমাধ্যম

প্রথম আলো ফরহাদ মজহার প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:২২

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কামাল আহমেদের লেখা ও পর্যবেক্ষণ আমাদের সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লিখেছেন, ‘গণতন্ত্রকে প্রাণবন্ত ও কার্যকর করে তোলায় মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে শুধু রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমের স্বায়ত্তশাসন যথেষ্ট নয়। ব্যক্তি খাতে গণমাধ্যমে কালোটাকার দৌরাত্ম্য, প্রভাবক ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং নৈতিক মানের অনুপস্থিতির মতো বিষয়গুলোতে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ প্রয়োজন।’


তাঁর (কামাল আহমেদ) সঙ্গে আমরা একমত। তবে তিনি লিবারেল ইকোনমিক পলিসি নামে পরিচিত ‘মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগ’কে যে ইতিবাচক চোখে দেখেন এবং নির্বিচার গ্রহণ করেন, আমি সেভাবে দেখি না, গ্রহণও করি না।


মুক্তবাজার অর্থনীতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে না। ইউরোপে বাজারব্যবস্থা বিকাশের সঙ্গে গণতন্ত্রের আবির্ভাব ও বিকাশের সম্বন্ধ আছে বটে, কিন্তু একালের কাছাখোলা মুক্তবাজার অর্থনীতি গণতন্ত্রের সহায়ক নয়; বরং গণতন্ত্রের, বিশেষত গণমাধ্যমের ঘাতক। পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমগুলোর দিকে তাকালেই সেটা বোঝা যায়।


কামাল আহমেদ ‘জুলাই সনদে কী থাকছে, কী থাকা উচিত’ (২৬ জুন ২০২৫) নিবন্ধটিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘জুলাই ঘোষণা’ দিতে বাধা দেওয়া নিয়ে কিছু বলেননি। জনগণকে বাদ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার দলিল হিসেবে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার সিদ্ধান্তে কোনো রাজনৈতিক বা আইনি সমস্যা দেখেননি।


৫ আগস্টে গণ–অভ্যুত্থান হয়েছে, কিন্তু ৮ আগস্টে বিদ্যমান সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থা বহাল রাখার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিবিপ্লবী রাজনীতির বৃত্তে প্রবেশ করে। কামাল আহমেদ ৮ আগস্টের সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব এবং পরবর্তী সময়ে জনগণকে সজ্ঞানে বাদ দেওয়ার প্রতিবিপ্লবী রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকেও ৫ আগস্ট থেকে আলাদা করতে পারেননি।



অন্তর্বর্তীকালীন উপদেষ্টা সরকার লুটেরা ও মাফিয়াশ্রেণির সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করছে লুটেরা ও মাফিয়াশ্রেণির রাজনৈতিক আধিপত্য নিশ্চিত করার জন্য। এটাও তাঁর কাছে সমস্যা মনে হচ্ছে না।


রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের জনগণের প্রতিনিধি গণ্য করা এবং তাঁদের সঙ্গেই আপসরফা করা আদতে পুরোনো ব্যবস্থাকেই পুনর্বাসিত করা। অধ্যাপক ইউনূস এই ভুল করছেন।


লুটেরা ও মাফিয়াশ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গেই আপসরফার প্রক্রিয়া গণ-অভ্যুত্থানের মর্মের বিরোধী এবং তিনি সেটা করছেন জনগণকে বাদ দিয়ে। এটাই প্রহসনের জায়গা। কারণ, এই লুটেরা ও মাফিয়াশ্রেণি যদি জনগণের প্রতিনিধি হতো, তাহলে তাদের নেতৃত্বেই গণ–অভ্যুত্থান হতো।


৮ আগস্টের সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লবের পর তথাকথিত সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন আদতে প্রতিবিপ্লবকেই বৈধতা ও ন্যায্যতা দেওয়ার প্রক্রিয়া।


‘জুলাই সনদ’ বানানোর প্রক্রিয়া জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের স্পিরিট বা মর্মের বিরোধী এবং সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লবকে বৈধতা দেওয়ার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া।


তথাকথিত জুলাই সনদ লুটেরা ও মাফিয়াশ্রেণির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্দোবস্তের দলিলের অধিক কিছু নয়, অধিক কিছু হয়ে ওঠা অসম্ভব।


ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে প্রধান উপদেষ্টা ‘জুলাই ঘোষণা’ দিতে দেননি। ৬ জুন ২০২৫ তিনি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই মাসেই একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করে জাতির সামনে উপস্থাপন করার কথা বলেছেন।


তিনি বলেছেন, তথাকথিত ‘জুলাই সনদে’ একটা জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকে রাজনৈতিক দলগুলো যে কটিতে একমত, তার তালিকা থাকবে। সেই জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে রাজনৈতিক দলগুলো নাকি জাতির কাছে সেগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও