আমরা তো তিমিরবিনাশী
২৯ ডিসেম্বর ১৯৮৮। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইন্সটিটিউটের (বর্তমান চারুকলা অনুষদ) কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী শিল্পাচার্যের জন্মদিন উদযাপনে মোটা কাগজ দিয়ে তৈরি কয়েকটি মুখোশ, বড় বড় তুলি, পেন্সিল, রঙের প্যালেট বানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খুবই ছোট পরিসরে ঝটিকা আনন্দ মিছিল করে। এমন উদযাপনের অভিজ্ঞতাই নতুন একটি ঘটনার জন্ম দিতে তরুণদের অনুপ্রেরণার উৎস হলো।
বাংলাদেশ তখন দীর্ঘ স্বৈরশাসনের কবলে আক্রান্ত, দুর্বিষহ-শ্বাসরুদ্ধকর, বন্ধ্যা সময়; তরুণ ছাত্র সমাজ অনাচারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ। তখন চারুকলার সেই শিক্ষার্থীরা স্বৈরশাসককে ইঙ্গিত করে ‘বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক’ প্রতিপাদ্যে পয়লা বৈশাখ ১৩৯৬ বঙ্গাব্দের (১৯৮৯ সাল) সকাল ৮টায় এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকে।
অনাচারের বিরুদ্ধে জনশিল্পের প্রকাশ, সম্প্রীতি ও পরম্পরার লোকশিল্পের রং-রূপ, আকার-আকৃতি, সাজ ও কাঠামোগত আনুপাতিক বিশাল নির্মাণ এবং সাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের প্রেরণায় পরবর্তী বছর ১৩৯৭ বঙ্গাব্দ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা আজ ১৪৩১ বঙ্গাব্দে পৌঁছেছে।
চারুকলা আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪২৩ বঙ্গাব্দে ইউনেস্কোর ইন্টার গভার্নমেন্টাল কমিটি অব আই.সি.এইচ. কর্তৃক ‘Intangible Cultural Heritage of Humanity’ হিসেবে স্বীকৃত ও তালিকাভুক্ত হয়েছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- মঙ্গল শোভাযাত্রা