![](https://media.priyo.com/img/500x/https://cdn.deshrupantor.net/contents/cache/images/1100x617x1/uploads/media/2023/11/09/9936e25c1309977c75ca15659a3f5c59-654d0f86b6a4d.jpg?jadewits_media_id=2176)
খুব কাছে রমজান অপেক্ষা সইছে না মুমিনের
১১ মার্চ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১২ মার্চ বাংলাদেশে রমজান শুরু হতে পারে। দিনের হিসাবে মাত্র ৩ দিন পর হলেও মুমিনের আর তর সইছে না। যদিও মুমিনের হৃদয়ে রমজানের পবিত্র হাওয়া বইতে শুরু করেছে শাবান মাসের শুরু থেকেই। কিন্তু বাস্তবে তো রমজানকে ছোঁয়া যাচ্ছে না। আমলের বসন্তে বিচরণ করা যাচ্ছে না। মাত্র তিন দিন বাকি। খুব কাছে রমজান। এই ভেবে মুমিন ক্ষণে ক্ষণে শিহরিত হচ্ছে। কেননা মুমিন সারা বছর অপেক্ষা করে রমজানের। অপেক্ষার পালা যখন ঘনিয়ে আসে তখন সামান্য অপেক্ষাও মধুর যন্ত্রণায় পরিণত হয়। আকাশের নতুন চাঁদ রমজানের প্রবেশদ্বার। সেই দ্বার খোলার অপেক্ষায় মুমিন।
রমজান নিয়ে মুমিনের কেন এত অপেক্ষা? কেন এত ব্যাকুলতা? কারণ রমজান অন্যান্য মাসের তুলনায় অত্যধিক ফজিলত, বরকত, রহমত ও মাগফিরাতময়। এ মাস আত্মশুদ্ধি, আত্মউন্নয়ন ও তাকওয়া অর্জনের। তাই বিশ্বের মুমিন মুসলমানরা প্রতি বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন এই মাসের। এই মাস পেলে তারা সাদরে গ্রহণ করেন এবং শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, খোশ আমদেদ মাহে রমজান, আহলান ওয়া সাহলান মাহে রমজান।
হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধীর আগ্রহে রমজান মাসের অপেক্ষা করতেন। তার কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল রমজান মাস। তিনি রমজানের আগে বিশেষ ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও উদ্বুদ্ধ করতেন। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন রমজান মাস পাওয়ার জন্য। রমজানের চাঁদ উদিত হলে তিনি অত্যন্ত খুশি হতেন। রমজানের চাঁদকে স্বাগত জানাতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে রমজানের সুসংবাদ দিতেন। এছাড়াও তিনি শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রেখে রমজানের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হতেন। শাবান মাসে তিনি এত বেশি নফল রোজা রাখতেন, যা অন্য কোনো মাসে রাখতেন না। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা অন্য কোনো মাসে রাখতেন না। তিনি পুরো শাবান মাসই রোজা রাখতেন এবং বলতেন, তোমাদের মধ্যে যার যতটুকু সামর্থ্য আছে, ততটুকু নফল আমল করো। কারণ তোমরা (আমল করতে করতে) পরিশ্রান্ত হয়ে না পড়া পর্যন্ত মহান আল্লাহ নেকি দেওয়া বন্ধ করেন না।’ (সহিহ বুখারি) অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, ‘আমি হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি।’ -সুনানে আবু দাউদ
মুমিন এই কারণেও বিশেষভাবে রমজানের অপেক্ষা করে যে, মহান আল্লাহ বান্দাকে রমজান মাসের রোজার প্রতিদান বিশেষভাবে দেবেন। হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য। কিন্তু রোজা এর ব্যতিক্রম। রোজা শুধুই আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব।’ -(সহিহ মুসলিম) মহান আল্লাহর কাছে বান্দার সব আমল এক রকম আর রমজানের রোজার হিসাব ভিন্ন রকম। মহান আল্লাহর কাছে বান্দা সব আমলের প্রতিদান লাভ করবে। তবে রোজার প্রতিদান মহান আল্লাহ নিজে বান্দাকে দান করবেন। মহান আল্লাহ কেমন প্রতিদান দেবেন তা তিনিই ভালো জানেন। আমরা শুধু বুঝি, বান্দাকে যে প্রতিদান মহান আল্লাহ বিশেষভাবে দেবেন, তা তার শান অনুযায়ী দেবেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- পবিত্র রমজান মাস