কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা

যুগান্তর মো. তাজুল ইসলাম প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:০৪

সরকার যদি নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করার আস্থায় পুরোপুরি আসতে পারে, তাহলে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন দ্রুত ও টেকসই হবে। কারণ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোই পারে প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে, যা কর্মচারী দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠান থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন সম্ভব নয়। জনপ্রতিনিধিরা নিজ নিজ এলাকায় বসবাস করেন। তাদের পক্ষে প্রত্যেক মানুষকে চেনা সম্ভব, তিনিই চিহ্নিত করতে পারেন কে অসহায় বা দরিদ্র, কার কী দুর্বলতা আছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের উদ্বুদ্ধ করতে দায়িত্ব প্রদান এবং সচেতনকরণ ও শক্তিশালী জবাবদিহির ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্কে কেউ কেউ নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে চায়। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের ছাড়া কোনোভাবেই পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্র স্থায়ী জনকল্যাণ ও সমৃদ্ধ হতে পারেনি। জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা রায় পরিচালনার উপলদ্ধি থেকে জনগণের ভোটে মানুষের উন্নতির লক্ষ্যে ১৮০০ শতাব্দীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হলেও তা সত্যিকারের গণতন্ত্র ছিল না। কারণ সেই সময় নারীরা ভোটার ছিল না। এবং পুরুষদের মধ্যে যাদের একটা ন্যূনতম পারিমাণ ভূসম্পত্তি ছিল তারা ভোটার হয়েছিল, যার সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ ছিল। পরবর্তীকালে ১৮৮৮ সালে লর্ড রিপন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, যাতে রাষ্ট্রের সব স্তরের জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে নিম্নস্তর পর্যন্ত জনগণের শাসন কায়েম হয়।


বহু পরীক্ষার পর ধীরে ধীরে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা পুরো পৃথিবীর বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত হয়ে মানবতার মুক্তির জন্য নির্ভরশীল অবদান রেখেছে। যে দেশ এ ব্যবস্থা যত ভালোভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে, সে দেশ তত দ্রুত উন্নত হতে সক্ষম হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, সঠিক স্থানীয় সরকারব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমে সব অর্জন টেকসই করা সম্ভব।


বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নামকরণ করে তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা চালু করেন, যা বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ-এই পাঁচ স্তরের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু পরস্পরের মধ্যে সমন্বয়ের ব্যবস্থা ইতঃপূর্বে আইন সংশোধনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের টেকসই অর্থনৈতিক অবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি ও প্রয়োজনীয় সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ যিনি ইউনিয়নের মেম্বার তিনি সরকার কর্তৃক স্বীকৃত এলাকার সব মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। তিনি জানেন ওই এলাকার কোন ব্যক্তি কেমন, কাকে দিয়ে কী কাজ করানো সম্ভব। কারণ সাধারণত সেই এলাকায় তার জন্ম, বড় হওয়া এবং ওই এলাকায় নেতৃত্ব দিয়ে তিনি জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই সরকার যখন বিভিন্ন মানুষের উন্নয়নের জন্য যে পরিকল্পনা নেবেন, তা সঠিক বাস্তবায়নের জন্য জনপ্রতিনিধিই একমাত্র অবলম্বন। তাই এই প্রতিনিধিদের সক্ষম করে গড়ে তোলার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। যেমন রাষ্ট্রের কর্মচারীদের নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গে যাতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় সেজন্য প্রশিক্ষণাগার আছে, তেমনই জাতীয় স্থানীয় সরকার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নামে জনপ্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান আছে। কয়েক বছরে ঢেলে সাজানোর পর গত বছর ৪৫ হাজার ৬ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।


কিন্তু এ প্রশিক্ষণ অত্যন্ত সীমিত সময়ের জন্য হয়। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের পাঠক্রম যথাযথ প্রণয়ন, প্রশিক্ষণের জন্য সার্বিক অবকাঠামোগত সুবিধা সম্প্রসারণ করা অপরিহার্য। উপরন্তু যথাযথ জবাবদিহির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা ছাড়া কোনো ক্ষমতার সুফল পাওয়া দুষ্কর। একইভাবে যারা দুষ্ট তাদেরকে সাজা দেওয়া যেমন অপরিহার্য, তেমনি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্যে সৃজনশীল, ন্যায়পরায়ণ, দায়িত্বশীলদের চিহ্নিত করে তাদেরকে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কাঙ্ক্ষিত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সংবাদমাধ্যমসহ সব প্রচারমাধ্যমে ঢালাওভাবে জনপ্রতিনিধিদের সম্বন্ধে নেতিবাচক প্রচার সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু কোনো জনপ্রতিনিধি অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে অপরাধী হিসাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা/সংবাদ প্রচার অন্যদের মন্দ কাজ পরিহার করার ব্যাপারে উৎসাহিত করবে। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, যেপদ সম্মানিত নয়, সে পদে ভালো লোকরা নিয়োজিত হতে নিরুৎসাহিত হয়। তখন পদ খালি থাকবে না, কিন্তু পদায়িত হবে মন্দ লোক, সেক্ষেত্রে ফলাফল জাতির জন্য অকল্যাণকর হবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন শিক্ষিত, সম্মানিত, অপেক্ষাকৃত ভালো লোকজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত হয়।


উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে ন্যূনতম ১২ হাজার ৫০০ ডলারের উপরে মানুষের মাথাপিছু আয় করতে হলে গ্রাম ও শহরের প্রত্যেক মানুষকে আয়বর্ধন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। কেউ অনেক রোজগার করলেও বেশি লোক রোজগারহীন থাকলে গড়ে পরিমাণ কমে যাবে। সে জন্য প্রত্যেক মানুষকে বর্ধিত আয়ে সমানভাবে গড়ে তুলতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও