‘বাম রোমান্টিকতা’ দিয়ে দ্বিদলীয় বৃত্ত ভাঙা যাবে?

সমকাল মোশতাক আহমেদ প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০১

দেশে গণতন্ত্রের দশা যা-ই হোক না কেন; তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে গোটা দেশ প্রধানত দুটি রাজনৈতিক শিবিরেই বিভক্ত– আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে রাজধানীর অভিজাতপাড়া পর্যন্ত এই বিভাজন বিস্তৃত। এই দুয়ের বাইরে যেসব দল আছে, সেগুলোর কোনোটিই নিজেদের প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। কিছুটা ব্যতিক্রম ধর্মীয় কয়েকটি দল। কিন্তু সেগুলোও এখন পর্যন্ত আত্মশক্তিতে দাঁড়ানোর চেয়ে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ঘাড়ে সওয়ার হয়ে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকেই সুবিধাজনক ও ঝুঁকিহীন মনে করছে। আর বড় দুটি দলও তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ক্ষমতায় যাওয়া এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এদেরকে কাছে টানছে। এভাবেই চলছে তিন দশক ধরে।


এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বাম ঘরানার কিছু দল দেশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির দ্বিদলীয় বৃত্তের বাইরে একটি তৃতীয় ধারা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে আসছে বটে, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হতে দেখা যাচ্ছে না। তাদের সব কর্মকাণ্ড পল্টন, প্রেস ক্লাব চত্বর; কখনোবা টেলিভিশনের টকশো ঘিরে আবর্তিত। সিপিবি কয়েক বছর ধরে সারাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন  ইস্যুতে সমাবেশ, র‍্যালি, মানববন্ধন ইত্যাদি করে চলেছে। বাসদও (বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল) কিছু জেলায় জনগণকে সংগঠিত করার চেষ্টা করে চলেছে। জনগণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনলেও আন্দোলনের সহায়ক শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে কুণ্ঠাহীন হতে পারছে না। ফলে দ্বিদলীয় বৃত্ত যেমন ছিল তেমনই রয়ে যাচ্ছে। বলা চলে, আরও শক্তিশালী হচ্ছে।


প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধান দুই দলের শাসনামলে ৩০০ টাকা দামের বালিশ কেনা হয় ২৮ হাজার টাকায়; পর্দা কেনা হয় ৩৭ লাখ টাকায়; রাতের আঁধারে উবে যায় খনির কয়লা; হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়; ৬০ টাকা লিটারের ডিজেল রাতারাতি হয়ে যায় ১২০ টাকা; লোডশেডিংয়ে জনজীবন অস্থির হলেও নিয়মিত বিরতিতে বাড়ে বিদ্যুতের দাম; তারপরও দ্বিদলীয় বৃত্তের বাইরে তৃতীয় ধারার রাজনৈতিক দল শক্তিশালী হয় না কেন? এ দেশে মানুষ কেন বামপন্থি দলগুলোর ডাকে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সংঘবদ্ধ হয় না? বিষয়গুলো নিয়ে কোনো গবেষণা হয় কিনা জানি না, তবে সময় এসেছে ভাবনাচিন্তার। নইলে দ্বিদলীয় বৃত্ত ভাঙার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।


আসলে গত পাঁচ দশকের ইতিহাস বলে, এ দেশে বামপন্থিরা সময়ের ভাষা বুঝতে সব সময় ভুল করেছে। ফলে সময়োপযোগী এবং সর্বসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো স্লোগান এ পর্যন্ত তারা তৈরি করতে পারেনি। স্বাধীনতার আগে যেমন, স্বাধীনতার পরও তারা শুধু ব্যর্থতারই পরিচয় দিয়েছে। ফলে লাভবান হয়েছে উঠতি পুঁজিবাদী শক্তি, যার প্রতিনিধিত্ব করছে দেশের দুটি বড় দল।


প্রসঙ্গত, দেশে যে বর্তমানে দ্বিদলীয় বৃত্ত কাজ করছে, এই বৃত্ত গড়াতেও দেশের বাম দলগুলোর কখনও প্রত্যক্ষ কখনও পরোক্ষ ভূমিকা কাজ করেছে। তাই আজ যখন বৃত্ত ভাঙার কথা বলা হচ্ছে, তখন বাম দলগুলোকে অবশ্যই তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করে নতুন ধারায় নিজেদের ঢেলে সাজাতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও