এবারের বিজয় দিবসের প্রত্যাশা

বিডি নিউজ ২৪ সৈয়দ আশরাফউদ্দিন আহমেদ প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:০৮

আমাদের জীবনে ২৬শে মার্চের স্বাধীনতা দিবসটি অতীব তাৎপর্য ও গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হলেও ১৬ই ডিসেম্বরের বিজয় দিবস আনেক আবেগপূর্ণ। বাঙালিকে স্বাধীনতার স্বপ্নে উজ্জীবিত করা বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত প্রথম দিনটিতে জড়িয়ে আছে পরাধীনতার শৃংখল ভেঙে বিশ্বের মানচিত্রে প্রথবারের মতো স্বাধীন বাংলাদেশ জন্মের অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকারকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে পরবর্তী নয়টি মাস ধরে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তখনকার সাড়ে সাত কোটি বাঙালি প্রাণপণ যুদ্ধ করেছে। অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। শত্রুর হাতে অত্যাচারিত হয়েছে। একই সাথে প্রতিনিয়ত দুশ্চিন্তা হয়েছে আধুনিক যুদ্ধে প্রশিক্ষিত পাকিস্তানি বাহিনীর অস্ত্র, হত্যা ও নির্যাতনের মুখে নিরস্ত্র বাঙালির মনোবল টিকে থাকবে তো?


তখনকার পশ্চিমা পত্রপত্রিকা পড়ে কখনো মনে হয়েছে আমাদের যুদ্ধটি আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের মতো রক্তক্ষয়ী ও আট বছরের মতো দীর্ঘস্থায়ী হবে। কখনো মনে হয়েছে ষোলো বছর ধরে চলতে থাকা ভিয়েতনাম যুদ্ধের মতো আমাদের যুদ্ধও অদূর ভবিষ্যতে শেষ হবে না। কখনো মনে হয়েছে আমাদের উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অথবা পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মতো অথবা উত্তর ও দক্ষিণ ভিয়েতনামের মতো মীমাংসাহীন দ্বিধাবিভক্তর পরিণতি হবে! এসব চিন্তার কারণ, আলজেরিয়ার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কোনো দেশই সশস্ত্র সংগ্রাম করে স্বাধীনতার মুখ দেখেনি! অথচ পরম পরাক্রমশালী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর সেই অসম যুদ্ধটিই চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা কি উল্লিখিত দৃশ্যমান ওই উদাহরণগুলোর একটি হয়ে থাকব? দুশ্চিন্তা ও ভয়ে দেহ-মন কুঁকড়ে উঠত। পাকস্তানি সেনা ও রাজাকারের স্পর্ধা ও অত্যাচারে প্রতিটি দিন কাটত অসীম উৎকণ্ঠায়। প্রতিটি ভোরের আগমন হতো নতুন, স্বাধীন একটি দিনের প্রত্যাশায়।


কিন্তু মুষ্টিমেয় ধিকৃত কিছু বিরোধী রাজাকার ছাড়া স্বাধীনতার প্রত্যয়ে দেশের প্রতিটি মানুষ অবিচল থাকায়, মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস, মুজিবনগর সরকারের প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব এবং মানবিকতার হাত ধরে প্রতিবেশি ভারত ও অধুনালুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন এগিয়ে আসার ফলে বাঙালির অসংখ্য প্রাণ, সম্ভ্রম ও সম্পদহানির বিনিময়ে সেসব দুর্ভাবনার অবসান হতে চলেছে। দীর্ঘ চব্বিশ বছরের শোষণ, বঞ্চনা, অত্যাচার ও হত্যার অবসান ঘটিয়ে আমাদের প্রতীক্ষার দিন শেষ হতে যাচ্ছে। একাত্তরের নভেম্বরে থেকে ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত বিভিন্ন সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর ক্রমবর্ধমান সফল আক্রমণে তা স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। প্রায় শত বছরের পৃথিবীর ইতিহাসে ন্যূনতম, মাত্র নয় মাসের যুদ্ধের ফলস্বরূপ ১৬ই ডিসেম্বর অবতীর্ণ হয়েছিল স্বর্গের এক দুয়ার উন্মোচন করে। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে, প্রতিটি গ্রামে, মহল্লায় ছড়িয়ে পড়েছিল স্বাধীনতার উচ্ছ্বাস। স্বজন ও সম্পদ হারানোর বেদনা ভুলে সব শ্রেণির মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধা এবং সহযোগী ভারতীয় সেনাদের স্বাগত জানাতে। আমিও ছিলাম সেই মিছিলে। অস্ত্র হাতে ছুটে বেড়িয়েছি ঢাকার রাজপথে।


সে এক অবিস্মরণীয় অনুভূতি। শুধু স্বাধীন নয়, পৃথিবীতে এবার আমরা উন্নত ও গর্বিত জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াব। অনেকের মতো ১৬ই ডিসেম্বরের স্মৃতি ও আবেদন আমার কাছে তাই অমলিন ও আবেগময়। স্বাধীনতাযুদ্ধের সমস্ত শহীদদের প্রতি দিনটির প্রতিশ্রুতিও অসীম। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দিনটির তাৎপর্য এবং প্রত্যাশাও অসীম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও