নির্বাচন, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শ্রম অধিকারকে একসঙ্গে দেখতে হবে
একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন মানে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। বাংলাদেশের নির্বাচন যেহেতু দলভিত্তিক, তাই নির্বাচনে বড় দলগুলো যদি অংশগ্রহণ না করে তাহলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলা যাবে। এটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক হয় তাহলে মানবাধিকারেরও উন্নতি হতেই থাকে। কারণ সরকার যদি জবাবদিহিতার বাইরে থাকে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতেই থাকে। বাংলাদেশে এখন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে অন্য পদ্ধতিতে।
রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে প্রায় ১০-১৫ হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে জেলবন্দি রেখে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে এ রকম নির্বাচন কখনো হয়নি। সরকারকে বুঝতে হবে, এ ধরনের নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
আরেকটি বিষয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এখনো বাংলাদেশে আসেনি। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে সামান্য পরিমার্জন করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হয়েছে। যেমন—পাঠ্যপুস্তকবিষয়ক একজন মতপ্রকাশ করেছেন তার বিরুদ্ধে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ওপেন সোসাইটি। এটি ওয়ান পার্টিভিত্তিক দেশ নয়। এখানে মানুষকে গঠনমূলক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে যা অন্যদের মতের বিরুদ্ধেও যেতে পারে। সরকারকে তোষণ করার মানে তো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়। গদি মিডিয়া সৃষ্টি করা বা সমর্থনকারী দাঁড় করানো তো গণতান্ত্রিক সরকারের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত না। কারণ মিডিয়া দেখবে কোথায় নীতিবহির্ভূত কাজ হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ যদি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না পেত তাহলে দেশ স্বাধীন হতো না। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের কারণে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমিত করে দেয়া হচ্ছে। গণতান্ত্রিক সরকারের উচিত ছিল এই মতপ্রকাশকে উৎসাহ দেয়া। দুঃখজনক বিষয় হলো এখানে সেই উৎসাহ তো দেয়া হয় না বরং উল্টো হয়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কথিত ব্যবস্থা নেয়া হয় যেখানে পুলিশ বাদী আবার পুলিশই সাক্ষী। এক মিডিয়া মারফত জেনেছি ১ লাখ মামলা, ৫০ লাখ আসামি। এ অবস্থায় নির্বাচন হলে তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।