মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণ-উত্তর ব্যবহার

বণিক বার্তা আবু তাহের খান প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:২৯

বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য (যদিচ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে) সরকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আওতায় ২০১১ সালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি লিমিটেড (সিপিজিসিএল) গঠন করে। ওই কোম্পানির আওতায় আমদানীকৃত কয়লা বহনকারী জাহাজ ভেড়ানোর জন্য মাতারবাড়ীতে যে জেটি নির্মাণ করা হয়েছিল তা সম্প্রসারণের মাধ্যমে একে একটি পূর্ণাঙ্গ সমুদ্রবন্দরে রূপদানের উদ্যোগের মধ্য দিয়েই বস্তুত মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর ধারণার যাত্রা, সে লক্ষ্যে ওই জেটিকে এরই মধ্যে সিপিজিসিএল কর্তৃক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমান মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর তাই জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন সিপিএর একটি প্রকল্প, যার আওতায় পরিকল্পনাধীন দুটি টার্মিনালের একটির নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো ১১ নভেম্বর। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৬ সাল নাগাদ এর সমুদয় নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।


প্রকল্পটি যেহেতু জাইকার মতো খ্যাতিমান সংস্থার আওতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে, তাই আশা করা যায় যে এর বাস্তবায়ন যথাসময়ে অর্থাৎ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদই সম্পন্ন হয়ে যাবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বন্দরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর পরই এর কাম্যস্তরের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের কার্যকর চিন্তাভাবনা কি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে? এক্ষেত্রে একেবারে প্রথমেই এ প্রশ্নের নিষ্পত্তি হওয়া দরকার যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর কি সিপিএর আওতায় কাজ করবে নাকি এ নিয়ে একটি আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে? এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত ডিপিপিতে কী উল্লেখ আছে আমরা জানি না। তবে ডিপিপিতে যা কিছুই উল্লেখ থাকুক না কেন, সে অনুযায়ী এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ প্রকল্প বাস্তবায়নোত্তর স্তরে এটি যেভাবে পরিচালিত হওয়ার কথা, রাজস্ব বাজেটের আওতায় সে অনুযায়ী স্থায়ী জনবল কাঠামো সৃষ্টির উদ্যোগ যেন এখন থেকেই নেয়া হয়। নইলে এ দেশে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরের যে জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, তা সম্পন্ন করতে গিয়ে মাতারবাড়ী বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম বিলম্বিত ও বিঘ্নিত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থেকে যাবে।


বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্পকে রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা এই যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধরেই নেয়া হয় যে কোনো একটি প্রকল্প রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তর হওয়া মানেই তার সমূদয় জনবল রাজস্ব বাজেটে চলে যাওয়া। ধারণাটি একেবারেই সঠিক নয়। কিন্তু তা সঠিক না হলেও রাজনৈতিক, মানবিক, মনস্তাত্ত্বিক ও অন্য নানা কারণে শেষ পর্যন্ত এ দেশে তেমনটিই ঘটে থাকে। এর ফলে সেখানে বহু অপ্রয়োজনীয় লোককে যেমন অহেতুক পুষতে হয়, তেমনি আবার বহু সময় প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উপযুক্ত লোকবলও খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ উন্নয়ন প্রকল্প ও রাজস্ব কাঠামোর আওতাধীন পরিচালন কার্যক্রমের প্রকৃতি, পরিধি ও বৈশিষ্ট্য এক নয়। অথচ সেটিকে জোড়াতালি দিয়ে এক বানিয়ে ফেলার ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, বিভাগ বা দপ্তরের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে ব্যাপক মাত্রায় কর্মদক্ষতার অবনমন ঘটে থাকে। আশা করব যে মাতারবাড়ী বন্দরের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটবে না এবং তেমনটি ঘটা থেকে বিরত থাকতে চাইলে এখন থেকেই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থাদি গ্রহণ করতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও